শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
১৪ কোম্পানির চেয়ারম্যান-এমডিকে তলব বিএসইসির সদর থানা দক্ষিণ কেওয়ার রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় এলজিইডি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা চকরিয়ায় মানববন্ধনেও থামছেনা বালু লুট পাটগ্রামে যুগের আলো পত্রিকার ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মতবিনিময় সভা নগরকান্দায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত বিভিন্ন ক্যটাগরীতে গুণী শিক্ষক মনোনীত সংসারের পাশাপাশি দিনাজপুর জেলা বিএনপির রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন হাসি আকতার হিরা ভাঙ্গুড়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা বড়লেখায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন উদ্যোগে সিরাতুন্নবী সা. মাহফিল বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মন্ডপে সন্ত্রাসী হামলার আশংকা করছেন জয়নুল আবেদীন ফারুক কেশবপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১

আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর আজকের এই দিনে ভয়াল গোর্কির আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ভোলাসহ উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা। ২০ ফুটেরও বেশি পানিতে তলিয়ে যায় গোটা জনপদ। প্রাণ হারায় লক্ষাধিক মানুষ। দুর্বিষহ সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি মানুষ। ঘটনার ৪৯ বছর পরও প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি ভোলাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে। অন্যদিকে আজও এই ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস ঘোষণার দাবি স্থানীয়দের। সেদিন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল ভোলার বিস্তীর্ণ জনপদ। ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, মনপুরা, কুক্রী-মুক্রী ঢালচর ও চর নিজামসহ বিভিন্ন দ্বীপচরের বেশিরভাগ মানুষই প্রাণ হারায়। গোটা এলাকা পরিণত হয় মানুষ আর গবাদিপশুর লাশের স্তূপে। সত্তরের সেই যন্ত্রণাময় স্মৃতি নিয়ে এখনও দিন কাটাচ্ছে ভোলাবাসী।
বৃহত্তর বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপকূলের ১০ জেলার বিশাল জনপদকে ভাসিয়ে নিয়েছিল। প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। প্রায় আড়াই লাখ মানুষ নিখোঁজ হলেও তাদের বেশিরভাগই ফেরেনি। নিকটজনরা তাদের লাশেরও কোন সন্ধান পাননি। ঘূর্ণিঝড়ের পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীসহ অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপদ্রুত এলাকায় ছুটে যান।
সে রাতে যে ভয়াবহ বিভিষিকা নেমে এসেছিল তা গোটা বিশ্বে বিরল। তাই নভেম্বর এলেই গোটা উপকূলীয় এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কে থাকেন। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর আড়াইশ’ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে এসে বরিশাল, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুরের বিশাল এলাকাকে লন্ডভন্ড করে দেয়। গত ২০১৯ সালে ১১ নভেম্বর আরেক ঘূর্ণিঝড় বুলবুল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে। সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বনভূমি সে ঝড়কে প্রতিহত করায় দুর্বল হয়ে যায়। ‘৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের আলোকে গড়ে তোলা রেড ক্রিসেন্টের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) অর্ধ লক্ষাধিক স্বেচ্ছাসেবী উপকূলবাসীকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। ফলে সিডর ও বুলবুলে প্রাণহানি আশাতীতভাবে হ্রাস করা সম্ভব হয়। তবে সিডরের তান্ডব এবং ক্ষয়-ক্ষতি ব্যাপক ছিলো। প্রকৃতির সাথে বঙ্গোপসাগরের বিচিত্র লীলার যে ভয়ঙ্কর রূপ, তার অস্তিত্ব অনুভব করতে গিয়ে দেশের উপকূলবাসীকে বার বার ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপ পরবর্তী পর্যায়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ ধরে উপকূলে আঘাত হানছে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
গত দুই শতকে উপকূলভাগের অন্তত ২৫ লাখ মানুষের প্রানহাণি ঘটেছে। সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও অন্তত ১০ লাখ কোটি টাকা। এরপরেও প্রকৃতির সাথেই লড়াই করেই বেঁচে আছেন উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষ। তবে একের পর এক প্রকৃতির তান্ডব অব্যাহত থাকলেও উপকূলবাসীর নিরাপদ আশ্রয় ও প্রাণিসম্পদ রক্ষার বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হয়নি। যদিও আগাম সতর্কতার কারণে প্রাণহাণির সংখ্যা আশাতীতভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে অন্তত ৫ লাখ মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল নিশ্চিত হয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদের কোন আশ্রয়স্থল নির্মিত হয়নি। সেই বিভিষিকাময় রাত আজো উপকূলের বয়োজ্যেষ্ঠদের তাড়া করছে। স্বজনহারা সব বয়সী মানুষ দুঃসহ যাতনা নিয়েই স্মরণ করছেন ভয়াল ১২ নভেম্বরকে। ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে আজ ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com