শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবির প্রতি সমর্থন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের খারাপ আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গত ২১ নভেম্বর এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী ও সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলাম বলেন, আগামী বাংলাদেশের কর্ণধার শিক্ষার্থীদের প্রতি সরকার ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন আচরণ জাতির জন্য চরম লজ্জার বিষয়। সম্প্রতি যানবাহনে হাফ ভাড়ার দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এটি শিক্ষার্থীদের নায্য অধিকার এবং বহু আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর নতুন করে ২৭% বেশি ভাড়া নির্ধারণের সুযোগে পরিবহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুরো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাসে নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বাসে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে বাস শ্রমিকদের দুর্ব্যবহার আরো বেড়ে গেছে। হাফ ভাড়া নেয়ার পরিবর্তে তাদের সাথে অশোভন আচরণে অতিষ্ঠ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গাড়ি থেকে লাঞ্ছিত করে বের করে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। ভাড়া বাড়ানোর পর থেকে শ্রমিকদের অশোভন আচরণ এবং হিংস্রতা তীব্র হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।অথচ শুধু বাংলাদেশ নয় বরং প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই যানবাহনে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে লজ্জাজনক চিত্র দেখতে হচ্ছে। প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের সাথে বাস শ্রমিকদের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনা সকল গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদৃশ্য কারণে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। দেশের লাখো শিক্ষার্থীদের প্রতি সরকারের এড়িয়ে যাওয়া মনোভাব এটাই প্রমাণ করে যে, শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের নূন্যতম কোন দায়বদ্ধতা নেই।
ছাত্রশিবির নেতৃবন্দ বলেন, সরকার বরাবরই শিক্ষার্থীদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে। করোনা কালে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে চললেও সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা কেন্দ্রীক সকল কার্যক্রম দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিলো। সে সময়ে শিক্ষার্থীদের ভয়াবহ বিপর্যয় ও দুর্দশার কথা কারো অজানা নয়। অসংখ্য শিক্ষার্থীর শুধু পড়াশুনারই ক্ষতিই হয়নি বরং তারা মানবেতর জীবন যাপন করেছে। শিক্ষার্থীদের আতœহত্যার ঘটনাও কারো অজানা নয়। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার শিক্ষার্থীদের সাথে যে আচরণ করেছে তা ছাত্রসমাজ, অভিভাবক ও বিবেক সম্পন্ন প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে আঘাত লেগেছে। সেই ক্ষতির বলয় থেকে শিক্ষার্থীরা এখনো বের হতে পারেনি। তার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পরিবহন ভাড়া না কমিয়ে তাদের সাথে আবারো অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। কোনভাবেই শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের দাবী ন্যায্য, যুক্তিসংগত ও জনসমর্থিত। শিক্ষার্থীদের এ দাবীর প্রতি আমরা আকুন্ঠ সমর্থন জানাচ্ছি। ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ হুশিয়ার করে বলেন, সব রকম সামর্থ্য ও সুযোগ থাকার পরও করোনাকে পুঁজি করে এদেশের লাখো শিক্ষার্থীর অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে না করতেই তাদের প্রতি আবারো অমানবিক আচরণ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি অব্যাহত দায়িত্বহীন ও অমানবিক আচরণ মেনে নেয়া হবে না। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ সারা দেশের সকল পরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নিশ্চিত করার আহবান জানান।