কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম। এ সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে চাল, ডাল, আটা, ময়দাসহ অন্তত ১০ ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। অবশ্য সামান্য কমেছে ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও সবজির দাম। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ সপ্তাহে সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা। তারা বলছেন, গত সপ্তাহে যে চাল ৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এ সপ্তাহে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। আলুর দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা। খোলা আটা কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৩৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে ৭.১৮ শতাংশ। টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৯টি নিত্যপণ্যের। এর মধ্যে প্রতি কেজি আদা ও তেজপাতার দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। অর্থাৎ দেড়শ’ টাকার তেজপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ১২০ টাকা কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গত সপ্তাহের ১০৫ টাকা কেজির মসুর ডাল (ছোট দানা) বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তাতে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য অস্বস্তিকর। বাজারে সরকারের মনিটরিং সেল ঠিকমতো কাজ করলে জিনিসপত্রের দাম এতোটা বাড়তো না বলে মনে করেন তিনি। এদিকে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। কিছুদিন আগে দেড়শ’ টাকার ওপরে কেজি বিক্রি হওয়া শিম এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম এখনও বেশ চড়া। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো ও গাঁজর। গতকাল শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে শিমের কেজি ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আর চলতি মাসের শুরুর দিকে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। শিমের পাশাপাশি গাঁজরের দামও কিছুটা কমেছে। মানভেদে গাঁজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা।’
এ প্রসঙ্গে কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘এখন দেশি গাঁজর বাজারে আসা শুরু হয়েছে। এ কারণে দামও কমছে।’ তিনি বলেন, ‘কয়দিন আগে যে গাঁজর ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, তা এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ এদিকে শিম ও গাঁজরের দাম কিছুটা কমলেও আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকা। আর আর কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
এদিকে পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ফুলকপির পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বাঁধাকপির পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মূলাশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাক বিক্রি হচ্ছে। আর পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। পাকিস্তানি কক ও সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। আর পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এদিকে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।