নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের কিসামত দোগাছি গ্রামের জসীম উদ্দিন দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে উন্নত জাতের ঘাসচাষ করে সংসার চালাচ্ছেন। এই উপার্জন দিয়েই তিনি চার ছেলেমেয়ের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এক ছেলে পড়ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অন্যের জমি বর্গা নিয়ে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেন জসীম। উন্নত জাতের এ ঘাস গরুর উত্তম খাদ্য। মাঠে গরুর খাবার উপযোগী ঘাস না থাকায় এ ঘাসের চাহিদাও প্রচুর। প্রতিদিন ক্ষেতের ঘাস কেটে ভ্যানে করে বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামগঞ্জে বিক্রি করেন। ঘাস বিক্রির টাকায় সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ জোগাচ্ছেন তিনি।
জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বসবাসের জন্য নিজের ভিটেমাটিও নেই আমার। অন্যের পাঁচ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে এক কোনায় ঘর তুলে থাকি আর বাকি অংশে নেপিয়ার জাতের ঘাসের চাষ করি। তিনি জানান, তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে আল আমিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, মেজো ছেলে কায়কোবাদ আলী পড়ে যশোর পলিটেকনিক্যাল কলেজে আর ছোট ছেলে আল লাফিস পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে। পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা আক্তার পড়ছে প্রথম শ্রেণীতে।
প্রতিবেশী শমসের আলী, আব্দুল হামিদ, লোকমান হোসেনসহ অনেকে জানান, জসীম উদ্দিনের একটিই পেশা, তা হলো ঘাসচাষ। এ কাজের আয় থেকেই তিনি পুরো সংসার চালাচ্ছেন। নিজের পরিশ্রমে ঘাস উৎপাদন করে ও তা বিক্রি করে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। এমনকি সবগুলো সন্তানকে পড়াশোনা করাচ্ছেন তিনি। সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকির বলেন, জসীম উদ্দিন অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সারা বছর গরুর খাওয়ার উন্নত জাতের ঘাসচাষ করেন। ঘাস বিক্রি করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ ও সংসার চালান তিনি। তার এ পরিশ্রমী জীবনযাত্রা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য।