রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ অপরাহ্ন

মহাকাশে ডানা মেললো বিশ্বের সর্ববৃহৎ টেলিস্কোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১

বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্পেস টেলিস্কোপ মহাকাশে তার অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য রওয়ানা করেছে । এর মধ্য দিয়ে হাবল টেলিস্কোপ যুগের সমাপ্তি হতে যাচ্ছে; রচিত হয়েছে নতুন এক ইতিহাস। গত শনিবার বিবিসির খবরে বলা হয়, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তৈরিতে এক হাজার কোটি পাউন্ড খরচ হয়েছে, যা ফ্রান্সের গুইয়ানা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ইউরোপীয় আরিয়ান রকেটের মাধ্যমে। এ টেলিস্কোপ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল ৩০ বছর আগে। দীর্ঘ চেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে এটিকে। এটিকে একুশ শতকের অন্যতম সেরা বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। হাবল টেলিস্কোপের স্থলাভিশিক্ত হবে এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাবলকে বসানো আছে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে সাড়ে পাঁচশ কিলোমিটার উঁচুতে। আর জেমস ওয়েবকে স্থাপন করা হবে পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে! এখন পর্যন্ত বানানো জটিলতম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির মধ্যে অন্যতম এ জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ; ব্যয়বহুলও। জেমস ওয়েব কাজ করবে ইনফ্রারেড আলো দিয়ে। আর হাবল প্রধানত কাজ করছে ‘ভিজিবল লাইট স্পেকট্রাম’-এ।
হাইডেলব্যার্গের মাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তৈরির সঙ্গে জড়িত। ইনফ্রারেড আলো দিয়ে কাজ করার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ আছে বলে মনে করেন মহাকাশবিজ্ঞানী ক্লাউস ইয়েগার। তিনি বলেন, ‘তারা গঠিত হওয়ার জায়গা, ধূলিকণায় ঢেকে যাওয়া আলো- এসব পরিস্থিতি দেখতে ইনফ্রারেড আলোর প্রয়োজন। তরঙ্গদৈর্ঘ্য বড় হওয়ায় ইনফ্রারেড ক্লাউডের মধ্যে ঢুকতে পারে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, মহাবিশ্বের আকার বাড়ছে, অনেক দূরের গ্যালাক্সির আলোর রং লালের দিকে ঝুঁকছে- যা ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা যাবে।’ হাবলের মতোই জেমস ওয়েবও জ্যোতির্বিদ্যাকে এগিয়ে নেবে। তবে ইনফ্রারেড দিয়ে কাজ করবে বলে জেমস ওয়েব ঠান্ডা রাখতে বিশেষ নকশা অনুসরণ করা হচ্ছে। একটি টেনিস কোর্টের সমান সানশেড দিয়ে তাপরশ্মি দূরে রাখার চেষ্টা চলছে। কিন্তু একটা রকেটে এত বড় শেড ধরবে না। তাই এমন এক জটিল অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে, যা শুধু মহাকাশে মেলা হবে। খুবই জটিল চ্যালেঞ্জ। ক্লাউস ইয়েগার বলেন, ‘মহাকাশে সব কাজ ঠিকঠাক মতো হতে হবে। তাই খুব সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’ পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে এটি বসানো হবে। পৃথিবীর কক্ষপথের চেয়ে সেখানেই জেমস ওয়েবকে সূর্যের তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা করা বেশি সম্ভব হবে। ফলে ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি চর্চার দারুণ এক জায়গা হবে সেটি। এ টেলিস্কোপ নিজ অবস্থানে পৌঁছে গেলে তা হবে বিশ্বে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। সেইসঙ্গে হাবলের দিন শেষ হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com