রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন : আসিফ নজরুল তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার : পানিসম্পদ উপদেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করা হবে না : মামুনুল হক নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন হতে পারে : উপদেষ্টা আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও সবাই একসঙ্গে জাতি গঠনে কাজ করবে: মঞ্জুরুল ইসলাম জাতিসংঘে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা মাহমুদ আব্বাসের মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের দাফন ছাত্র-জনতার অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয় স্বৈরাচার থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে

পানির সরবরাহ নিয়ে আগের মতো গ্রাহকদের আর অভিযোগ নেই

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব আয় গত এক যুগে বেড়েছে তিন গুণ। এ সময়ে পানির দামও বেড়ে হয়েছে প্রায় তিন গুণ। ২০০৯ সালে যেখানে আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট পানির মূল্য দিতে হতো ৫ টাকা ৭৫ পয়সা; সেখানে বর্তমানে দিতে হচ্ছে ১৫ দশমিক ১৮ টাকা করে। একই সাথে বর্তমানে বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ইউনিটপ্রতি পানির মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে ৪২ টাকা করে। এর সাথে যেসব এলাকায় ওয়াসার সুয়ারেজ লাইন রয়েছে সেখানকার গ্রাহকদের এর দ্বিগুণ মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। সাথে আরো ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। ঢাকা ওয়াসা ২০০৯ সালের পর গত ১৩ বছরে ১৪ বার পানির দাম বাড়ালেও এখনো সব এলাকায় সম্পূর্ণ গন্ধহীন পানি সরবরাহ করতে পারেনি। তবে পানির সরবরাহ নিয়ে আগের মতো গ্রাহকদের আর অভিযোগ নেই।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসা আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির মূল্য ৫ টাকা ৭৫ পয়সা রাখতো। এরপর প্রতি বছরই ঢাকা ওয়াসা ৫ শতাংশ হারে পানির দাম বাড়িয়েছে। ২০১৬ সালে দুই বার পানির দাম বাড়ে। ২০১৭ সালে আবাসিক গ্রাহকদের ১০ টাকা থেকে ১০ দশমিক ৫০ টাকা এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ৩২ টাকা থেকে ৩৩ দশমিক ৬০ টাকা করা হয়। ২০১৮ সালে আবাসিকে ১০ দশমিক ৫০ টাকা থেকে ১১ দশমিক ০২ টাকা এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ৩৩ দশমিক ৬০ টাকা থেকে ৩৫ দশমিক ২৮ টাকা করা হয়। ২০১৯ সালে আবাসিকে ১১ দশমিক ০২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৫৭ টাকা এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ৩৫ দশমিক ২৮ টাকা থেকে ৩৭ দশমিক ০৪ টাকা করা হয়। ২০২০ সালে একবারে ২৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। আবাসিকে ১১ দশমিক ৫৭ টাকা থেকে একলাফে ১৪ দশমিক ৪৬ টাকা এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ৩৭ দশমিক ০৪ টাকা থেকে ৪০ টাকা করা হয়। সবশেষ গত বছরের জুলাই থেকে আবাসিকে ১৪ দশমিক ৪৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ দশমিক ১৮ টাকা করা হয় এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়। এ কারণে ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে ওয়াসার রাজস্ব আয় ছিল ৪৪০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮০০ কোটি টাকা।
মুগদা এলাকার এক গ্রাহকের গত নভেম্বর মাসের পানির বিল থেকে দেখা যায়, ওই মাসে তার পানির বিল এসেছে এক হাজার ৩২ টাকা। এর সাথে আরো এক হাজার ৩২ টাকা পয়ঃনিষ্কাশন বাবদ ধরা হয়েছে। সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরো ৩১০ টাকা ধরা হয়েছে। এতে মোট বিল এসেছে দুই হাজার ৩৭৪ টাকা। ওই এলাকার জাকির হোসেন নামে এক গ্রাহক বলেন, আমাদের এলাকায় পানির বিলের সাথে সমপরিমাণ সুয়ারেজের বিল দিতে হয়। কিন্তু ধনী এলাকায় এটা দিতে হয় না। এটা আমাদের ওপর জুলুম। পানির দুর্গন্ধ আগের থেকে কিছুটা কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপরও এখনো পানি ফুটিয়ে পান করতে হয়। তবে ঢাকার বাইরে থেকে অতিথি এলে তারা এ পানি ঠিকমতো খেতে পারেন না। এ ছাড়া লাইনের পানির জন্য প্রতি মাসে বিল দেয়া হলেও ভালো পানির জন্য ওয়াসারই এটিএম বুথ থেকে পানি কিনে আনতে হয়। ফলে পানি বাবদ গ্রাহকদের দু’বার করে খরচ করতে হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পানির দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে ওয়াসা জানিয়েছে, উৎপাদন ও বিতরণ ব্যয়ের সাথে বিক্রয়মূল্যের সামঞ্জস্য করা। আরেকটি কারণ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ায় তার সাথে ব্যয় সমন্বয় করা। ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, দাম বাড়ানো নয়, আমরা একে দাম সমন্বয় বলি। প্রতি বছর পানি উৎপাদন করতে গিয়ে আমাদের খরচ বেড়ে যায়। আইন অনুযায়ী সেই খরচ সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে। মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করতে ওয়াসা আইন ১৯৯৬-এর ২২ ধারা অনুযায়ী ওয়াসা বোর্ড প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের দাম সমন্বয় করে থাকে। এক হাজার লিটার পানি উৎপাদন করতে ২২ থেকে ২৬ টাকা খরচ হয় জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আবাসিক গ্রাহকদের কাছে এর থেকেও কম দামে পানি বিক্রি করা হচ্ছে। পানিতে দুর্গন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, শীতকালে শীতলক্ষ্যার পানি একেবারেই আলকাতরার মতো কালো হয়ে যায়। সেই পানিকে শোধন করে আমরা বিশুদ্ধ করে সরবরাহ করে থাকি। সেই দূষণের দায়দায়িত্ব তো আমাদের না। তার পরেও আমরা একে ট্রিটমেন্ট দিয়ে বিশুদ্ধ করি। আগে পানিতে এমোনিয়া বেশি আসত। এখন আমরা কিছু গাছ লাগিয়ে প্রাকৃতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেছি। তিনি আরো বলেন, ওয়াসার লাইনে বিশুদ্ধ পানি থাকে। কিন্তু সেই পানি বাসার ট্যাংকি বা রিজার্ভারে গিয়ে নষ্ট হয়। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পানির ট্যাংক পরিষ্কার করে না। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পাইপ লিকেজ হয়ে যায়। তবে এখন আর পাইপ লিকেজ হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ অনেক উন্নতমানের পাইপ বাসানো হয়েছে। লাইনের পানি পরীক্ষা করে দেখাতে পারব আমাদের পানি বিশুদ্ধ। কিন্তু এটার গ্যারান্টি দেয়া যাবে না। কারণ যেকোনো মুহূর্তে লাইনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ দিকে স¤প্রতি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান জানিয়েছেন, রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক আলাদাভাবে পানির দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ওয়াসার পরিচালক সহিদ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে এটি স্টাডি পর্যায়ে রয়েছে। ওয়াটারএইডকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com