জেলায় রবি মৌসুমে চাষকৃত সরিষার আবাদি জমি থেকে সাত টন মধু আহরণ কার্যক্রম এখন শেষের পথে। উৎপাদিত এ মধুর আর্থিক মূল্যমান প্রায় ২৮ লাখ টাকা। কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরিষার আবাদি জমিতে এবার দেড় হাজার মৌ-বক্স স্থাপন করা হয়। এসব মৌ-বক্স থেকে প্রায় সাত টন মধু আহরণ হচ্ছে। সরিষার আবাদি জমিতে মৌ-বক্স স্থাপনের কারণে ফুলের পরাগায়ন ভালো হয়েছে। ফলে এ শস্যের উৎপাদন হবে আশাতীত। পাশাপাশি, বাড়তি উৎপাদন হিসেবে প্রচুর বিশুদ্ধ মধু পাওয়া যাচ্ছে। জেলার সিংড়া উপজেলায় সর্বাধিক আট হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে এবার সরিষা আবাদ হয়। উপজেলার হাতিয়ান্দহ, লালোর, শেরকোল, চৌগ্রামসহ চলনবিলের হলুদ সরিষার মাঠ থেকে মৌ চাষিদের ব্যাপকভাবে মধু আহরণ করতে দেখা যায়। সরিষা চাষি আল মাসুম জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে এ বছরই প্রথম মধু উৎপাদন শুরু করেছি। সরিষার ফলন উঠার আগেই বাড়তি আয় করার সুযোগ পাচ্ছি।
কৃষক সাগর জানান, মাত্র দুটো বাক্স নিয়ে গত বছর প্রথম মধু আহরণ শুরু করেছিলাম। খরচ বাদে গত বছর মধু বিক্রি করে আমার ৪০ হাজার টাকা আয় হয়েছিল। এ বছর আমার বাক্স আছে ১০টি। আশা করছি ২ লাখ টাকার মধু বিক্রি করতে পারবো।
সিংড়া উপজেলার আদর্শ মৌ চাষি বাবুল জানান, বিসিকে দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ছাড়াও কৃষি বিভাগ আমাকে মৌ চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমি এখন মৌ চাষের প্রশিক্ষক। এবার আমার মৌ-বক্সের সংখ্যা ৬০টি।
নাটোরের আদর্শ মৌ চাষি ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়ায় সরিষার আবাদি জমি থেকে মধু আহরণ কার্যক্রমে এবার ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা বলেন, সরিষা থেকে মধু উৎপাদন করে বাড়তি আয় হওয়ায় কৃষকদের মাঝে মধু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। কৃষি বিভাগ এবার ১০জন কৃষককে মধু চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে ১০টি আধুনিক মৌ বাক্স প্রদান করে। তাঁরা ইতোমধ্যে আশানুরুপ মধু উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে। আমরা আশা করছি আগামীতে সরিষা চাষের পাশাপাশি মৌ চাষির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
নাটোর কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মাহমুদুল ফারুক জানান, আবাদি জমি থেকে মধু আহরণ কার্যক্রম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নাটোরে। ভবিষ্যতে মধু আহরণের পরিধি আরো বাড়বে।