রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন

মিরসরাইয়ে কেওড়া বন ও ফসলি জমি ধ্বংস করে দীঘি খননের অভিযোগ

কামরুল ইসলাম (মিরসরাই) চট্টগ্রাম :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২

মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পাঞ্চলের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা) অফিসের অর্ধ কিলোমিটার উত্তরে নতুন আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন চর নিলক্ষী এলাকায় বেজা’র অধিগ্রহনকৃত অঞ্চলের একরের পর একর কেওড়া বাগান ও ফসলি জমি রাতের আঁধারে অবৈধ ভাবে দিঘি খননের অভিযোগ উঠেছে একশ্রেণীর প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এসব দিঘী খননের ফলে বনের কেওড়া বাগান উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে সংরক্ষিত বন পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা তৈরির পাশাপাশি মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এই জায়গা চর নিলক্ষী মৌজার উপর অবস্থিত। যা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল এর জন্য অধিগ্রহন করা হলেও সেটি এখনো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এখানে ফসলি জমিসহ কেওড়া বাগান কেটে দীর্ঘ সময় ধরে একশ্রেণীর প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে এই দিঘী খনন করে আসছে। তারা আরো জানায় “চর নিলক্ষী সোনালী সমবায় কৃষি খামার সমিতি লিঃ” সদস্যদের মাঝে সরকার ৫৫৬ একর জায়গা বন্ধোবস্তি দেওয়া হয় ২৪ জানুয়ারী ১৯৭৬ সালের। উক্ত জায়গার অন্তর্ভুক্তির মধ্যে ৪৫ একর সম্পত্তি জবর দখল করে দিঘী খনন করছে। সমিতির সদস্য কামাল উদ্দিন ও সানা উল্ল্যাহ নামে দু’জন জানান, দীর্ঘদিন আগে থেকে এখানে বন ধ্বংস করে মৎস্য প্রকল্প করা হয়েছে। স্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে বনের গাছপালা উপড়ে ফেলে খালি করা হচ্ছে। তারপর সময়-সুযোগ বুঝে নিশ্চিত করা হচ্ছে দখল। সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল জানান, দীর্ঘদিন এ জায়গাগুলো আমরা ভোগ দখলে ছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্দ্যেশে আমাদের এই জায়গা গুলো অধিগ্রহণ করে। তা আমরা সাদরে গ্রহণ করি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হল এই যে আমরা যে জায়গা বেজা কর্তৃপক্ষকে ছেড়ে দিলাম সে জায়গায় এখন কিছু প্রভাবশালী চক্র জবর দখল করে মাছ চাষের আওতায় আনছে। কেন প্রশাসন ও বেজা কর্তৃপক্ষ নিরব সে ব্যাপারে আমরা খুবই হতাশ। তিনি আরো বলেন প্রশাসনিক উদ্যোগের জন্য আমরা থানায় চলতি বছনেরর ৩ ফেব্রুয়ারী তারিখে আলী হায়দার টিপু, গোফরান, আব্দুর রহিম সহ বেশ কয়েকজনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রকার প্রতিকার পাইনি। এদিকে স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গত ফেব্রুয়ারিতে মাসিক সমন্বয় সভায় মিটিংয়ে তিনি বেজা কর্তৃপক্ষকে বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে আমরা জমি ছেড়ে দিয়েছি, সে জায়গায় এখন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে কোন দুষ্কৃতিকারী যেন মাছ চাষ কিংবা অবৈধ জবরদখল না করে সেই ব্যাপারে তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত আলী হায়দার টিপু কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কোন দিঘী খনন করছি না। ঐখানে আমার কোন দিঘী নেই। দিঘী এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য কে বা কারা কাটছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি জোর দাবি জানাই। এ বিষয়ে উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা গফুর মোল্লা বলেন, ‘যেখানে মৎস্য প্রকল্প করা হচ্ছে, এটি এখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য বেজা কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বেজা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারেন। মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ ফারুক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, অধিগ্রহনকৃত জমিতে কেউ কোন প্রকার দিঘী খনন করতে পারবে না। যে বা যারা দিঘী খনন করেছে সেটা অবৈধ হয়েছে তা আমরা দখল করবো ভেঙ্গে দেবো এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com