লবণাক্ত পানির কারণে পটিয়ায় প্রায় প্রতিদিন রাতে দুর্ঘটনা বেড়েছে। মূলত পটিয়া ইন্দ্রপুল থেকে আমজুরহাট পর্যন্ত সড়ক লনাক্ত পানিতে পিচ্ছিল থাকার কারণে মোটরসাইকেল চালকরা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে একটি অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে পটিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা(৪৫) ও মনছুর আহমদ মনজু(৬০) নামের দুইজন আহত হয়েছেন। তারা পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। এর আগে একই জায়গায় দৈনিক যুগান্তরের ফটোগ্রাফার রাজেশ চক্রবর্ত্তী ও ফটোগ্রাফার নিপুন কুমার দে গুরুতর আহত হয়েছেন। এভাবে প্রতিদিন সন্ধ্যার হলেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের পটিয়া ইন্দ্রপুল থেকে আমজুর হাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক যেন মৃত্যুর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে কাঁচা লবণ মহা সড়ক হয়ে পটিয়া লবণ শিল্প নগরীতে প্রক্রিয়াজাত করতে আনা হয়। এসব লবণের ট্রাক রাস্তার পাশে রেখে আনলোড করার কারণে লবণাক্ত পানিতে সড়ক ভিজে একাকার হয়ে যায়। ফলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পড়ে দুর্ঘটনা হচ্ছে। এটি প্রতিদিনের দৃশ্য। ইতোমধ্যে পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল লবণ মিল মালিকদের সর্তক করেছেন এবং পলিথিন দিয়ে লবণ শিল্প কারখানায় আনার নির্দেশ দিযেছেন। জানা গেছে, কক্সবাজার, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণের অসংখ্য মাঠ রয়েছে। এখান থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহা সড়ক হয়ে এসব লবণ ট্রাকে করে রাতভর পটিয়া ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প কারখানায় আনা হয়। লবণবাহী ট্রাক রাস্তার পাশে রেখে আনলোড ও পলিথিন ছাড়া কাঁচা লবণ আনার কারণে লবণাক্ত পানিতে সড়ক ভিজে যায়। পটিয়া ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প নগরীতে বর্তমানে ৫০টি লবণ মিল কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় মাঠ পর্যায়ের কাঁচা লবণ ট্রাকে করে এনে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে তা বাজারজাত করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, লবণ মিল মালিকদের এ বিষয়ে সর্তক করা হলেও তারা কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহা সড়কের পটিয়া সদর ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে লনাক্ত পানির কারণে রাতে সড়ক যেন মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য বিজন চক্রবর্ত্তী জানিয়েছেন, লবণাক্ত পানির কারণে পটিয়া ইন্দ্রপুল থেকে আমজুর হাট পর্যন্ত সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদে রূপ নিয়েছে। প্রায় প্রতিদিন মোটরসাইকেল আরোহীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। দুর্ঘটনা কমাতে হলে লবণবাহী ট্রাকে পলিথিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। না হয় এ দুর্ঘটনা কোনভাবে কমবে না। পটিয়া ইন্দ্রপুল এলাকায় ইতোমধ্যে অসংখ্য লোক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন এবং কয়েকজন প্রাণও হারিয়েছেন। পটিয়া ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক আল্লাই জানিয়েছন, কক্সবাজার, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে মাঠ পর্যায়ের কাঁচা লবণ প্রতিদিন ট্রাকে করে সড়ক পথে পটিয়া ইন্দ্রপুল শিল্প কারখানায় আনা হয়। লবনাক্ত পানি যেন সড়কে না পড়ে সেজন্য পলিথিন ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু লবণ শিল্প কারখানার মালিক পলিথিন ব্যবহার না করার কারণে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা হচ্ছে।