মূলত তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সরকার নতুন করে প্রস্তাবিত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২২’ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের দ্রুত আইনি প্রতিকার নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে আইনটি। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২২’ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ তিন কারণে: ১। অবৈধভাবে ভূমির দখলগ্রহণ, বা দখল গ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতিসাধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পেশীশক্তি, দেশীয় অস্ত্র অথবা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে যে অপরাধগুলো হয় তা প্রতিরোধ ও দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিত করা। ২। ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি খাসভূমিসহ সরকারি যেকোনও প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভূমিতে প্রকৃত মালিকের স্বত্ব ও দখল নিশ্চিত করা।
৩। ভূমিলিপ্সু কোনও ব্যক্তির জালিয়াতি বা প্রতারণামূলক ও অন্যের যোগসাজশে সৃষ্ট দলিল বা কোনও দলিল ছাড়া উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধভাবে ভূমির দখলগ্রহণ, বা দখলগ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতিসাধন রোধ করা।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৯ জানুয়ারি ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে এর প্রাথমিক খসড়া (বিল) ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সবার মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছিল।
১৩ এপ্রিল বুধবার নাগরিক ও অংশীজনের মতামতের ওপর আলোচনা করতে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে উপর্যুক্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। এতে বেশ কিছু সুপারিশ উঠে আসে। সূত্র জানায়, আইন প্রণয়নের ধাপগুলোর মধ্যে আছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রয়োজনে আইন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী পরিমার্জন করে সংশ্লিষ্ট বিলটি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো হবে। পরের ধাপে সংসদে বিলটি উত্থাপন করবেন স্পিকার। অর্থবিল না হওয়ায় এটি উত্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের দরকার হবে না। এরপর বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে সংসদ কর্তৃক স্থায়ী কমিটি অথবা বাছাই কমিটির কাছে বিলটি পাঠানো, এবং রিপোর্টসহ পুনরায় সংসদে বিলটি পাসের জন্য পেশ করা হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংসদ সদস্যদের ভোটে বিল পাস হলে স্পিকার সই করবেন। এরপর রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেলেই ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২’ বিলটি জাতীয় সংসদের একটি আইন হিসেবে সরকারি গেজেটে ছাপা হবে। নতুন এ আইন সম্পর্কে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, এ আইনে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ দ্রুত আইনি প্রতিকার পাবে। সুবিচার নিশ্চিত করাই এ আইনের অন্যতম লক্ষ্য।