বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম(৮০)। আতœনির্ভশীলের জন্য কিনেছিলেন জমি। সেই জমিটুকু দখলে নিয়েছে তারই ছেলে আব্দুস সোবহান। দখলীয় জমি উদ্ধারের চেষ্টায় ওই ছেলের মারপিটের শিকারও হয়েছেন তিনি। অশ্রুজলে ঘুরছেন সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে। এখন কিছুতেই থামছে না এই সুফিয়ার কান্না! বুধবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে যাওয়া হয় বৃদ্ধা সুফিয়া বেগমের বাড়িতে। এসময় ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে ছিলেন তিনি। কথা বলতেই হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠলেন। তারই ছেলে সোবহানের বিরুদ্ধে জানালেন প্রতারণামূলক জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ। এই সুফিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত শুকুর উদ্দিনের স্ত্রী। জানা যায়, ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষীপুরে ৩৮ শতক ও ইদিলপুর মৌজায় ৩ শতক জমিসহ মোট ৪১ শতক জমি কবলা খরিদমূলে মালিক হন সুফিয়া বেগম। এরপর নিজে ভোগদখল করে আসছিলেন। এরই মধ্যে তার ছেলে আব্দুস সোবহান জোরপুর্বক ওই জমি দখল করে নেয়। এমতাবস্থায় সুফিয়া বেগম ও আব্দুস সোবহানের নাম বিকৃতি ঘটিয়ে ছোনিয়া খাতুনকে দাতা ও আব্দুর রহমানকে গ্রহীতা বানিয়ে জমিটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল করে নেয় আব্দুস সোবহান। অথচ জমির মালিক সুফিয়া বেগম এ দলিল সম্পাদনের বিষয়টি কিছুই জানেন না। একপর্যায়ে আব্দুস সোবহানের প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়লে এলাকায় শুরু নানা হঁইচঁই। এরই ধারাবাহিকতায় সুফিয়া বেগম ৪১ শতক জমি উদ্ধারের চেষ্টা করলে তার ছেলে সোবহানের শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এ নিয়ে একাধিক গ্রাম্য শালিস অনুষ্ঠিত হলেও জমির দখল ছেড়ে দিতে নারাজ সোবহান। আবারও গত ১৪ এপ্রিল দুপুরের দিকে সোবহানকে দখল স্বত্ব ছেড়ে দিতে বললে সোবহান ও তার স্ত্রী দুলালী বেগম এবং স্বজন রোকেয়া বেগমসহ আরও অনেকে বৃদ্ধা সুফিয়াকে পিটিয়ে-শ্বাসরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় তার আতœচিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করে বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আব্দুস সোবহানকে জমি লিখে দেইনি। ভুয়া দাদা-গ্রহীতা দেখিয়ে আমার ৪১ শতক জমি লিখে নিয়েছে আব্দুস সোবহান। এরই জেরে সম্প্রতি আমাকে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান জানান, মায়ের নাম ছোনিয়া বেগম ওরফে সুফিয়া বেগম। তার নাম আব্দুর রহমান ওরফে আব্দুস সোবহান। মা ছোনিয়া বেগম ওই জমি দলিলমূলে লিখে দেবার সুবাদে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ সেরাজুল হক বলেন, সুফিয়া বেগমের জমিজমা ও মারামারি বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র সাদুল্লাপুর থানা থেকে ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। সেটি এসআই জিয়াউর রহমান তদন্ত করবেন।