মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এদিন তিনি তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। শূন্যে ঘুষি ছুড়ে, আনন্দে সতীর্থদের জড়িয়ে ধরে, দুই হাত প্রসারিত করে, প্রিয় ব্যাটে চুমু এঁকে দিয়ে তারপর সবুজ জমিনে সিজদার মাধ্যমে উদযাপন করলেন তিনি। প্রায় দুই বছর পর ১৮টি টেস্ট ইনিংস খেলার পথে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিক। ঠিক তার পরপরই মুশফিকুর রহিমের স্ত্রী জান্নাতুল মন্ডি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে মুশফিককে অভিনন্দন জানিয়ে দুটি ছবি পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমরা হাসিমুখেই বিদায় নিবো ইনশাআল্লাহ।’ তিনি আরো লেখেন, ‘তবে আপনাদের রিপ্লেসমেন্ট আছে তো? সেদিকেও একটু নজর দিলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন হতো।’ এমন একটা সময়ে মুশফিকের পরিবার থেকে এই বার্তা এলো যার কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে একটি বৈঠক করে। ওই বৈঠকের থেকে বেরিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, ‘সিনিয়র ক্রিকেটারদের উচিৎ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা।’
সেদিন তিনি মুশফিকুর রহিমের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে বলেন, ‘মুশফিক এখনো খেলছে। কিন্তু ওর চিন্তা-ভাবনা জানা যাবে। ও কী ভাবছে, আমরা জানতে পারবো।’ মূলত কোনো ফরম্যাটে ক্রিকেটারের সরে যাওয়ার বিষয়টি তোলার পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের টেস্ট ক্রিকেট ছেড়ে দেয়ার পর সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিদায়ের ব্যাপারটিই বেশি আলোচিত হয়ে আসছে। দ্ইু হাজার একুশ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর দলে জায়গা হারিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তিনি দলে ফিরেছেন। দল থেকে বাদ পড়ার পর মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন মুশফিক, নির্বাচকরা তখন ‘বিশ্রাম’ বললেও আসলে তাকে ‘বাদই’ দেয়া হয়েছিল, এমনটিই বলেছিলেন তিনি। এর আগে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে টেস্ট ফরম্যাটে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০১৭ সাল থেকে রিয়াদের টেস্ট দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের শততম টেস্ট ম্যাচে তাকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাদশের বাইরে রাখেন। ২০১০ থেকে ২০১৮ – টানা আট বছর টেস্ট ফরম্যাটে কোনো সেঞ্চুরি পাননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর ২০১৯-২০ সালে নানা সময়ে টেস্ট দলে রিয়াদের জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি জিম্বাবুয়ের মাটিতে ১৫০ রানের একটি ইনিংস খেলার পর অবসর নিয়ে নেন। যদিও টেস্ট ফরম্যাটে অবসর নিয়ে কখনোই সেভাবে মুখ খোলেননি তিনি। হারারেতে ২০২১ সালের জুলাই মাসে সতীর্থরা ‘গার্ড অফ অনার’ দিয়ে মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে নিয়ে যান, যা দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনি আর টেস্ট ম্যাচ খেলছেন না। সূত্র : বিবিসি