শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গত বুধবার যেন ফিরে এসেছিলেন শেন ওয়ার্ন। না সত্যি সত্যি নয়। সত্যি সত্যি তা সম্ভবও নয়। সাকিবের খেলা দেখে দর্শকদের মনে পড়েছে কীর্তিমান শেন ওয়ার্নের কথা। সাকিব নিজেকে স্মরণ করালেন শেরে বাংলায়, এলেন যেন স্মৃতির দৃশ্যপটে। কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। তারা মরেও অমর। তাদের কর্ম তাদের জীবিয়ে রাখে। তারা যে ফিরে আসে স্মৃতির ভেলায় ভেসে, সুখের আবেশে, মিষ্টি হেসে। কখনো আপন ভাবনার ভিড়ে তারা ফিরে আসে, আবার কখনো বা ফিরে আসে অন্যের বেশে! ২০০৬ সালে এন্ড্রু স্ট্রাউসকে বোকা বানিয়ে যেভাবে খাইয়েছিলেন ঘোলা পানি, আজ যেন সাকিবে ফিরে এলো সেই বাহুবল। বল অফ দ্য সে ুরি, অর্থাৎ শতকের সেরা বলটাও আছে তার ঝুলিতে, কিন্তু সাদা পোশাকে ৭০০ তম শিকার পাওয়া এন্ড্রু স্ট্রাউসক করা বলটাও ঠাঁয় পেয়েছে তার আত্মজীবনীতে।
কী করেছিলেন সাকিব? যার জন্য স্বয়ং শেন ওয়ার্নের কথা বলতে হচ্ছে! জানতে তবে গতকাল লঙ্কান অধিনায়ক করুনারত্নেকে ঘূর্ণি বিভ্রমে বোকা করে আউট করা বলটা দেখুন। স্লো মোশনে আবার দেখুন, তবুও দেখবেন আরো দেখতে ইচ্ছে করবে। ওভারের আগের ৫ বলে শিকার করার পরিকল্পনা এঁটেছেন। অতঃপর… হাওয়ায় ভাসানো বলটা পড়লো অফ স্টাম্প, কী অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে। মনে হলো, একটু এগোলেই নাগাল পেয়ে যাবেন ব্যাটসম্যান। কিন্তু ধরতে গিয়ে আর পেলেন না। পড়ল একটু পেছনে, বাঁকও নিলো খানিকটা; আর ব্যাট-প্যাডের মধ্যে যে আধ গজ ফারাক, তাই গলে বলটা গিয়ে ঠেকল মিডল স্টাম্পে। উল্লাসে লাফিয়ে উঠল গ্যালারি। ক্রিকেটাররা মাঠের চারদিক থেকে ছুটে আসছেন সাকিবের দিকে। আর সাকিব মুচকি হেসে আছেন আঙুল তুলে। আর স্কোরবোর্ডে ভেসে উঠল: দিমুথ করুনারত্নে বোল্ড সাকিব আল হাসান।
এতটা পড়তে পড়তে না হয় আউট করা দৃশ্যটা দেখতে দেখরে বুঝে যাওয়ার কথা ওয়ার্নকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নামানোর কারণটাও। এমনিতেই দুজনের যা প্রভাব, তাতে দুই দেশের ক্রিকেট দুজনকে রাজাধিরাজ মেনে নিয়েছে অনেক আগেই। বোধ হয় মাঠের ক্রিকেটেও ওয়ার্ন হওয়ার শখ জেগেছিল সাকিবের। হোক না, মাত্র একটা বলের জন্যই। কিন্তু সাকিব চাইলে তা পারবেন আরো শতবার, তাও বিশ্বাস আছে।