অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদ বা মুনাফায় ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উন্নয়ন, পরিচালনা ও বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, জাহাজ শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, রফতানি আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং আমদানি নির্ভরতা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে এনে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্য সামনে রেখে সরকার ‘জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২১’ প্রণয়ন করেছে। এরই আলোকে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অংশগ্রহণকারী ব্যাংক: বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক এ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
তহবিল ব্যবস্থাপনা: এ স্কিমের পরিচালনাগত কার্যক্রম ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয় কর্তৃক সম্পাদিত হবে। পুনঃঅর্থায়নের আবেদন পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলসহ তহবিল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।
ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা: জাহাজ নির্মাণকারী রফতানিমুখী ও স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করা যাবে।
বিধি-নিষেধ: এ স্কিমের আওতায় ডকইয়াড নির্মাণ বা জমি ক্রয়/ইজারার বিপরীতে ঋণ/বিনিয়োগ প্রদান করা যাবে না; ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক কোনও খেলাপি ঋণ গ্রহীতার অনুকূলে এ স্কিমের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ প্রদান করা যাবে না; এ স্কিম হতে গৃহীত ঋণ/বিনিয়োগ দ্বারা কোনোভাবেই অপর কোনও ঋণ/বিনিয়োগ পরিশোধ বা সমন্বয় করা যাবে না।
সুদ হার: অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ১.০ শতাংশ সুদ হারে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এ স্কিমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪.৫ শতাংশ।
মেয়াদ: মেয়াদি ঋণ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জাহাজ নির্মাণের জন্য গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১২ বছর (৩ বছর + ৯ বছর) মেয়াদে ঋণ বিতরণ করতে পারবে। গ্রেস পিরিয়ড শেষে ৯ বছরের মধ্যে মাসিক/ ত্রৈমাসিক সমকিস্তিতে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
চলতি মূলধন ঋণ/বিনিয়োগ: এ স্কিমের আওতায় ব্যাংক নিজস্ব তহবিল হতে ১ বছর মেয়াদে চলতি মূলধন ঋণ প্রদান করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক প্রচলিত নিয়মানুসারে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করবে এবং ব্যবসায়িক লেনদেন সন্তোষজনক হলে তা নবায়ন করতে পারবে। তবে, নবায়নের মাধ্যমে কোনও গ্রাহক সর্বোচ্চ ৩ বছর এ স্কিমের আওতায় ঘোষিত সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন বিবেচনায় চলতি মূলধনবাবদ প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে এ স্কিমের আওতায় প্রদত্ত সুবিধার সময় হ্রাস/বৃদ্ধি করতে পারবে।
কার্যাদেশের বিপরীতে প্রদত্ত ঋণ/বিনিয়োগ: কার্যাদেশ/রফতানি/বিক্রয় চুক্তির বিপরীতে প্রদত্ত ঋণের মেয়াদ সংশ্লিষ্ট কার্যাদেশ/রফতানি/বিক্রয় চুক্তির শর্তানুযায়ী মূল্য পরিশোধের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারিত হবে। তবে তা কোনোভাবেই বর্ণিত সর্বোচ্চ ৩ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১২ বছরের অধিক হবে না। ঋণ বিতরণ পদ্ধতি: গ্রাহকের প্রয়োজন বিবেচনায় বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ স্কিমের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ বিতরণ করা যাবে; ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণপূর্বক বিভিন্ন কিস্তিতে ব্যাংক মঞ্জুরিকৃত ঋণ/বিনিয়োগ বিতরণ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে, কিস্তির পরিমাণ ৩টির কম হবে না।