আসিফ আকবর। বাংলা গানের যুবরাজ বলা হয় তাকে। ২০০১ সালে প্রকাশিত তার প্রথম সংগীত অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাকটি দিয়ে রাতারাতি পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পান তিনি। ও প্রিয়া ও প্রিয়া তুমি কোথায়- সুরেলা সেই আর্তচিৎকার আজও ছুটে বেড়াচ্ছে গ্রাম-শহর, দেশ-বিদেশের অলিগলিতে। বর্তমানে গান করার পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ অ্যাকটিভ থাকেন আসিফ। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখেন তিনি। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তোলা একটা ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেন এ সঙ্গীতশিল্পী।
সেখানে তিনি লিখেছেন, মুশফিকুর রহিম, আমাদের গর্বের ধন। আমার হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে খেলা সর্বকালের সেরা উইকেটকিপিং অলরাউন্ডার। মুশফিকের সাথে প্রথম পরিচয় শ্রীলঙ্কার তাজসামুদ্রা হোটেলে, এটা হয়তো উনার মনে নেই। কুমিল্লা থেকে একটা গ্যাং খেলা দেখতে গিয়েছিলাম।
ছোটখাটো মানুষটা একটু রীতির বাইরেই চলতেন। আনন্দ ফূর্তিকে অস্বীকার করার কিছু নেই, সফরে খানিক উদ্বেলিত উশৃঙ্খলতা মন্দ নয়। ক্যাপ্টেন আশরাফুলের মাধ্যমেই পরিচয়। কাজ শেষে সবাই যখন অবসর সময়টায় হালকা পার্টি মুডে থাকে তখনও মুশফিক সিরিয়াস। আমি নিজের চোখে দেখেছি রাত ৯টা ৩০ মিনিটে তিনি ডিনার শেষ করেই চলে গেছেন নিজের রুমে, বিশ্রাম এবং মনসংযোগ প্রয়োজন।
একটা সময় মুশফিক হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং স্তম্ভ, দেশের মানুষ ভালোবেসে নাম দেয় মি. ডিপেন্ডেবল। টেস্ট আর ওয়ানডে ক্রিকেটে তার ডেডিকেশন বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক দিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আমার ভালোই লাগে না, উপভোগ করতে পারি না।
মুশফিকের মতো গ্র্যামাটিক্যাল ক্রিকেটারের সাথে এই বিনোদন সর্বস্ব কদর্য ফরম্যাটটা আসলে যায় না। ভারতীয় লিজেন্ড বিরাট কোহলি একশো সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ড করার সক্ষমতা রাখেন। টি-টোয়েন্টি বাণিজ্যিক ক্রিকেটের কারণে তিনি আসলে রেস্টলেস। এই ফরম্যাটে তিনি যদি আর না খেলেন নিশ্চয়ই ক্রিকেট বিশ্বের সুযোগ হবে নতুন ইতিহাস দেখার।
মুশফিক বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের মতো রাইজিং একটা দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমরা প্রতিদিনই তার কাছ থেকে সফলতা আশা করি অথচ গৌরবময় অনিশ্চয়তার এই খেলায় মুশফিকের অবদান ভুলে যাই মুহূর্তেই। ব্যাপারটা এমন- দিতে পারলে ভালো, না দিতে পারলে দলের বোঝা। অথচ একবারও ভাবি না বাংলাদেশের ক্রিকেটে মুশফিকের অনবদ্য অবদান নিয়ে। যাই হোক এটাই নিষ্ঠুর নিয়ম, বাঁচো মরো, ফর্মে থাকতেই হবে। মুশফিক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ায় আমি ভীষণ খুশি। দলের এই সিনিয়র ক্রিকেটারের বাকিটা সময় টেস্ট এবং ওয়ানডেতে যথেষ্ট অবদান রাখার সুযোগ আছে। এই ফাঁকে পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটাররাও দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ পাবেন। আমার কাছে মুশফিক ছোট ক্রিকেট প্লেয়িং দেশের বিশাল তারকা। একজন বাংলাদেশি ক্রিকেট ফ্যান হিসেবে আমি মুশফিকের কাছে কৃতজ্ঞ। দেশের ক্রিকেটকে তিনি অনেক দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ভবিষ্যতে অবসর নিলেও দেশের জন্য তার অভিজ্ঞতা আমাদের খুব প্রয়োজন হবে। তিনি একজন অজেয় ফাইটার, মুশফিকুর রহিম তার জায়গায় ওয়ান অ্যান্ড অনলি। আপনার সুস্বাস্থ্য সফলতা আর দীর্ঘায়ু কামনা করি মি. ডিপেন্ডেবল। মানুষের আন্টিসান্টি কথায় কষ্ট নেবেন না, এগুলো একজন স্পোর্টসম্যানের কাছে শুধুই একটু মুচকি হাসির খোরাক মাত্র। ভালোবাসা অবিরাম।