মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা এবং Flynz world travel and tours-এর আর্থিক অনুদানে তিন বছর ধরে কারাবন্দী মোহাম্মদ হোসেনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সোমবার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে ফ্লাই করে সন্ধ্যায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। মোহাম্মদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা। তার কাছে কোনো বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় বিস্তারিত ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, ইমিগ্রেশন পুলিশের মামলা অনুযায়ী মোহাম্মদ হেসেনের অপরাধ তার কোনো বৈধ পাসপোর্ট ছিল না। পাসপোর্ট ছাড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর প্রথমে তিন বছর জেলে ও পরে ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। মোহাম্মদ করোনার আগে আটক হওয়ার পর করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন কারণে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হয়েছে বলেও জানা যায়। দূতাবাসের ওয়েলফেয়ার বিষয়ক সহকারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবেদককে মোহাম্মদ হোসেনের বিষয়টি অবহিত করেন। পরে প্রতিবেদক ফ্লাই এনজেড ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল এন্ড ট্যুরসের মার্কেটিং ম্যানেজারকে অনুরোধ করেন মোহাম্মদকে একটি ফ্রি টিকিট দেয়ার জন্য। এরপর ইউএস বাংলার একটি ফ্রি টিকিট ডিটেনশন সেন্টারে দূতাবাসের মাধ্যমে পাঠানো হয়। তবে মোহাম্মদ নিজ খরচে টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারলে আরো আগেই দেশে ফিরতে পারত বলেও জানা যায়। আরো জানা যায়, মালয়েশিয়ার জেলে আটক বন্দীদের দেশটির সরকার কর্তৃক ফ্রি টিকিটের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই বছরের পর বছর জেল খাটতে হয় বিনা হিসাবে। যদি কেউ ফ্রি টিকিট দেয় এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে টিকিট কিনতে পারে তাহলে দ্রুত দেশে ফেরা সম্ভব হয়। ডিটেনশন সেন্টার থেকে কোনো বন্দী বাইরের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারেন না। তাছাড়াও বন্দী অবস্থায় নগদ টাকাও রাখতে পারেন না তারা। ডিটেনশন ক্যাম্পে যারা আটক থাকে তাদের সাথে একমাত্র দূতাবাস কর্মকর্তা ছাড়া আর অন্য কেউ যোগাযোগ করতে পারেন না। বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এজন্য সাজার মেয়াদ শেষ হলেও সময় মতো দেশে ফিরতে পারেন না তারা। সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছেন যারা ডিটেনশন সেন্টারে আটক হন তাদের যেন সরকারি খরচে বিমান টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে তাদের ভোগান্তি অনেক কমে যাবে। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (লেবার উইং) নাজমস সাদাত সেলিম বলেন, ’প্রথম দিকে ডিটেনশন সেন্টারে সহস্রাধিক বাংলাদেশী আটক থাকলেও এখন এই সংখ্যা খুবই কম। আমাদের তৎপরতায় বন্দীদের সংখ্যা দুই শ’-এর নিচে নেমেছে। আমরা চেষ্টা করছি ক্যাম্পে আটককৃতদের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশীদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে তারা যেন অবৈধ ও অনৈতিক পন্থায় মালয়েশিয়ায় প্রবেশ না করেন। মালয়েশিয়া আসতে হলে অবশ্যই বৈধ পন্থায় আসতে হবে। অন্যথায় দেশটির প্রচলিত আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’