লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। এতে জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। সরগরম হয়ে উঠেছে মেঘনা উপকূলের সবগুলো মাছের আড়তে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ইলিশ ধরা পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে জেলেরা। চলতি মাসে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আসবে, তাই দুঃশ্চিন্তায় আছেন তারা। তবুও আগের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন জেলেরা।
বর্তমানে ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দামও রয়েছে নাগালের মধ্যে। ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য। মৎস্য বিভাগ বলছেন, বৈরী আবহাওয়া ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে ইলিশের আমদানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
স্থানীয় মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, কমলনগর উপজেলায় পাইকারি মাছ ঘাটগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ টন ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এখন ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে, এক কেজি থেকে এক কেজি ৪০০ গ্রামের ইলিশ এক হাজার ৩০০ টাকা, আর এক কেজি ৫০০ গ্রাম থেকে দু’কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৭০০ থেকে দু’হাজার টাকা কেজি দরে। ফলে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর কয়েক দিন পর ৭ অক্টোবর থেকে ১৫ দিন মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে মেঘনায় ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চল মেঘনায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে করে উপজেলার মাছ ঘাটে বেড়েছে ইলিশের আমদানি। সেই সাথে দামও ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে রয়েছে। উপজেলার মতিরহাট, বাত্তিরখাল, কটোরিয়া, লুধুয়া, মাতাব্বরহাটের মাছঘাটসহ বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে শ’ শ’ নৌকা ও ট্রলার নিয়ে জেলেরা নেমে পড়েছে ইলিশ শিকারে। কারো যেন বসে থাকার সময় নেই। কেউ আবার জাল বুনছেন নৌকাতে বসে। ঘাটগুলোতে পাইকার আড়ৎদার ও জেলেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ ইলিশ কেনা-বেচা করছেন, কেউ বরফ দিচ্ছেন, কেউ বা ব্যস্ত মাছ প্যাকেট করা নিয়ে। মৎস্যজীবীদের হাঁক-ডাকে মুখরিত আড়ৎগুলো। দীর্ঘ দিন পর সরগরম হয়ে উঠেছে আড়ৎগুলো। উপজেলার ছোট বড় সবগুলো হাটবাজারে এখন রুপালি ইলিশের দেখা মিলছে।
জেলে নুর মোহাম্মদ, ছেরু ব্যাপারী, আক্তার মাঝি, সালাউদ্দিন মাঝি ও হারুন মাঝি জানান, অনেক দিন পর নদীতে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে তারা বেশ খুশি। এখন আবার নিষেধাজ্ঞার সময় হওয়ায় হতাশাও রয়েছে তাদের। কমলনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, নিম্নচাপের প্রভাব, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ও মেঘনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় পাইকারি বাজারগুলোতে ইলিশের আমদানি বেড়েছে, সেই সাথে দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।