আটটি প্রধান সড়কে বিন্যস্ত দেশের জাতীয় মহাসড়কের নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কটি বিস্তৃত হয়েছে আরো ১০২টি মহাসড়কে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের বিন্যাস অনুযায়ী, দেশের ১১০ জাতীয় মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৯৯০ কিলোমিটার। অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ জরিপে উঠে এসেছে, জাতীয় মহাসড়কের ৯৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ভালো ও চলনসই অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ভালো অবস্থায় আছে ৭৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। চলনসই অবস্থায় আছে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। খারাপ, দুর্দশাগ্রস্ত ও একেবারে ভাঙাচোরা সড়কের পরিমাণ প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার।
যদিও মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গিয়েছে ভিন্ন চিত্র। প্রধান আট সড়কের পাঁচটিরই বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। একটিতে চলছে উন্নয়নকাজ। আরেকটিতে চলছে সংস্কার কার্যক্রম। উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলমান থাকা মহাসড়কগুলোকে জরিপের বাইরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সওজ। অধিদপ্তরের নেটওয়ার্কভুক্ত ১৪৭টি আঞ্চলিক সড়কের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার। সংস্থাটির এইচডিএম সার্কেলের রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন চাহিদা প্রতিবেদন ২০২২-২৩-এর তথ্য অনুযায়ী, এ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্কে খারাপ সড়কের পরিমাণ ৩৭৭ কিলোমিটার। আর সাড়ে ১৩ হাজার কিলোমিটার জেলা সড়ক নেটওয়ার্কে খারাপ সড়কের পরিমাণ ১ হাজার ৭১০ কিলোমিটার।
যদিও জরিপে পাওয়া সড়কের মান-সংক্রান্ত এ তথ্যের সঠিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, জরিপটি স্থানীয় পর্যায়ের দপ্তরগুলোর সহায়তা নিয়ে সওজের এইচডিএম সার্কেল থেকে পরিচালনা করা হয়। আর জরিপে পাওয়া তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়। ফলে জরিপের তথ্য প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ থেকে যায়। অতীতেও সওজের জরিপের সঙ্গে বাস্তবতার অমিল পাওয়া গিয়েছে। রাজধানীর সঙ্গে বিভাগীয় শহর, সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও এশিয়ান হাইওয়েকে যুক্ত করেছে প্রধান আটটি জাতীয় মহাসড়ক। জাতীয় মহাসড়কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত এবং দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে বিবেচনা করা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে (এন-১)। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে শুরু হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত এ মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৪৬২ কিলোমিটার। বর্তমানে এ সড়কের ১৯২ কিলোমিটার অংশে ৭৯৩ কোটি টাকার একটি সংস্কার প্রকল্প চলমান রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ সংস্কারকাজ চার বছরে সম্পন্ন করা হবে। মহাসড়কটি ঘুরে দেখা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি খানাখন্দ রয়েছে চট্টগ্রাম অংশে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে চলাচল করা ভারী যানবাহনের কারণে পিচ উঠে যাওয়া, উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। সড়কের এ ভাঙাচোর অংশ কখনো কখনো দুর্ঘটনার কারণও হচ্ছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের সিটি গেট থেকে মিরসরাই পর্যন্ত প্রতিটি বাজার এলাকায় রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থা ভাটিয়ারী, সীতাকু-, মাদামবিবির হাট ও কুমিরা এলাকায়। মিরসরাই উপজেলার বড় দারোগার হাট থেকে ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ভাঙাচোরা, ছোট-বড় গর্ত এবং ডেবে যাওয়ার পরিমাণ বেশি। অন্যদিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন অংশ, ফেনীর মহীপাল ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সড়কের পিচ ডেবে গিয়েছে, যেগুলোয় বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকছে।
জরিপের তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার ভিন্নতা গোটা জরিপের মানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, এইচডিএমের সংস্কার ও পুনর্বাসন চাহিদা জরিপটি প্রায়োগিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ জরিপের আলোকেই ঠিক করা হয় পরবর্তী বছর বা বছরগুলোয় সড়কে কী পরিমাণ সংস্কার ও পুনর্বাসনকাজ করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ এ জরিপ পরিচালনার জন্য সওজ অধিদপ্তরের আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে। যদিও মাঠপর্যায়ে সার্কেল অফিসগুলোই মূলত এ জরিপ পরিচালনা করে এবং জরিপটির তথ্যগুলোকে স্বাধীনভাবে যাচাইও করা হয় না। ফলে যে ধরনের তথ্য উঠে এলে তা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরাপদ হবে, সে ধরনের তথ্যই কিন্তু জরিপগুলোয় উঠে আসছে। আমরা অতীতেও দেখেছি, এইচডিএমের জরিপের সঙ্গে বাস্তব হিসাবের মিল থাকে না। অর্থাৎ যতটা রাস্তা ভালো বা খারাপ রয়েছে বলা হয়, বাস্তবে তার চেয়ে খারাপ সড়কের পরিমাণই বেশি থাকতে দেখা যায়।
জরিপ পরিচালনার সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক সামছুল হক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এইচডিএমের জরিপের কাজ করা হয় নভেম্বর থেকে মার্চে। বর্ষার পরে সংস্কার করার পর মানের দিক দিয়ে সড়কের অবস্থা যখন তুলনামূলক ভালো থাকে, তখনই জরিপটি করা হয়। এটা যদি বর্ষার পর পরই অর্থাৎ জুন-জুলাইয়ের দিকে শুরু করা যেত, তাহলে সড়কের সঠিক অবস্থাটি তুলে ধরা যেত।
সড়ক ভালো নাকি খারাপÍজরিপে সেই তথ্য খোঁজার বদলে একটি সড়ক কত দ্রুত এবং কেন খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে সেই তথ্য খোঁজার পরামর্শ দেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সিলেট হয়ে জাফলং পর্যন্ত এন-২ জাতীয় মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ২৮৭ কিলোমিটার। এ মহাসড়কের সিলেট থেকে গোয়ালাবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙাচোরা রয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ সুরমার বাইপাস, লালাবাজার, রশিদপুর, অতিরবাড়িসহ বিভিন্ন অংশ বেহাল। শেরপুর থেকে বিশ্বরোডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পয়েন্টেও রয়েছে ভাঙাচোরা।
জাতীয় মহাসড়কের মধ্যে মানের দিক দিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ঢাকার বনানী থেকে জয়দেবপুর হয়ে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মহাসড়কটির (এন-৩) দৈর্ঘ্য ১১২ কিলোমিটার। চার লেনের এ মহাড়কের ময়মনসিংহ অংশে বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। জায়গায় জায়গায় ডেবে গিয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ময়মনসিংহ মহানগর অংশের বাইপাস এলাকায় সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে ঢালাই ও সংস্কারকাজ শুরু হলেও গত ছয় মাসেও তা শেষ হয়নি। এছাড়া ভালুকা পৌর শহরের কিছু অংশে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারকাজ চলমান।
ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া থেকে শুরু হয়ে ভালুকার নাসির গ্লাস ফ্যাক্টরির মাস্টারবাড়ী পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার সড়কের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জায়গা অনেকাংশ ডেবে গিয়েছে। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বেলতলী, চুরখাই, ত্রিশাল উপজেলা অংশের কানহর, বৈলর, দরিরামপুর, নওধার, রাগামারা, বগারবাজার এলাকার সড়কের অবস্থা বেশ নাজুক। বিশেষ করে নওধার জিরো পয়েন্ট ও রাগামারা বাজার অংশে সড়ক যেবে ও ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। সেখানে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। ভালুকা অংশের পৌর এলাকার থানার মোড়, ভরাডোবা বাজার, সিডস্টোর বাজার ও স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দ ও চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মানের দিক দিয়ে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর সড়ক (এন-৪)। তবে মহাসড়কটিতে বিভিন্ন স্থানে সেতুর উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে।
ঢাকার মিরপুর থেকে বগুড়া হয়ে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত বিস্তৃত জাতীয় মহাসড়ক এন-৫। মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৫২৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার সড়ক সাসেক-১ প্রকল্পের মাধ্যমে চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। মহাসড়কটির এ অংশ ভালো অবস্থায় রয়েছে। তবে এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯২ কিলোমিটার অংশজুড়ে সাসেক-২ প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নকাজ চলমান। চলমান উন্নয়নকাজের কারণে এ ১৯২ কিলোমিটার অংশের একটা বড় অংশ খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ঢাকা থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের মধ্যে চলাচল করা যানবাহনগুলো যানজটে পড়ছে। ভাঙাচোরা রাস্তা আর চলমান নির্মাণকাজের নানা ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে।
জাতীয় মহাসড়ক এন-৬ ঈশ্বরদী থেকে নাটোর-রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। ২৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটির নাটোর-রাজশাহী অংশের ১৪ কিলোমিটার ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাটোর সওজ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কের বেশকিছু স্থানে বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে, রয়েছে খানাখন্দও। সওজের চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক জানান, বারোঘরিয়া থেকে সোনামসজিদ পর্যন্ত সড়কটির বাঁক সরলীকরণের কাজ অচিরেই শুরু হবে। এ বিষয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাবও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফরিদপুর-যশোর হয়ে খুলনার মোংলা পর্যন্ত এন-৭ মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২৫০ কিলোমিটার। মহাসড়কটির যশোর-মাগুরা অংশের প্রায় ২১ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যশোরের খাজুরা বাস্ট স্ট্যান্ড থেকে সীমাখালী পর্যন্ত অংশটিও ভাঙাচোরা। যশোর পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু জানান, দীর্ঘদিন ধরে যশোর-মাগুরা সড়কের যশোর অংশের অবস্থা খারাপ। এতে পরিবহনগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে সওজের যশোর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, যশোর-মাগুরা সড়ক উন্নয়নে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে যশোর-নড়াইল মহাসড়ক উন্নয়নে।
ঢাকা-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী-পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা অংশে গড়ে তোলা হয়েছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। মানের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে ভালো সড়কগুলোর একটি ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ। তবে ভাঙ্গার পর থেকে জায়গায় জায়গায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। বরিশাল অংশের ৭০ কিলোমিটার অংশ শুরু হওয়ায় প্রায়ই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কটির এ অংশে রয়েছে ১৭টি স্থায়ী হাট। এসব হাটও দুর্ঘটনা ও যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা এইচডিমের জরিপের তথ্যের সঙ্গে সড়ক অবকাঠামোর বাস্তব মানের তারতম্যের কথা বললেও সওজের প্রকৌশলীরা বলছেন, দেশের সড়ক অবকাঠামো এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সওজের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান বণিক বার্তাকে বলেন, বিগত এক দশকে দেশের সড়ক অবকাঠামোর চিত্র একেবারে বদলে গিয়েছে। চার লেনের সড়ক হয়েছে। অনেকগুলো সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান। এখন আমরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় দ্রুতগতি ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক ব্যবস্থার সংস্থান রাখছি। যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোয় ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস তৈরি করছি। সড়কের পাশাপাশি সেতুর উন্নয়নও সমানতালে করা হচ্ছে এবং এ উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে দেশের সড়ক অবকাঠামো আরো উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।-বণিকবার্তা