শতবর্ষে পদার্পন করেছে ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের থানা রোডে অবস্থিত ৪৯নং বাড়ী মজলিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। শতবর্ষে পুতির বিষয়টি জানেনা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নজরে আসে সোনারগাঁওয়ের সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে। তথ্য সংগ্রহ করতে প্রথমে প্রধান শিক্ষক নারগিস শামসুন্নাহার কোন কথা বলতে চাননি। শতবর্ষ প্রদার্পনের বিষয়টি খুটিয়ে খুটিয়ে সংগ্রহ করেন সংবাদ কর্মীরা। প্রধান শিক্ষক নারগিস শামসুন্নাহার জানান, সোনারগাঁও উপজেলার বাড়ি মজলিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির একশত বছর পূর্ণ হয়েছে। এ বিদ্যালয়ে ৩৩ শতক জমি যার চতুর্দিকে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেন। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রথমে ১০ শতক জমি দাতা সদস্য বাড়ী মজলিশ গ্রামের শিক্ষানুরাগী আশরাফুল ইসলাম ভূইয়া, ক্রমান্বয়ে জমি দান করেন মৃত বদর উদ্দীন আহমেদ, মৃত সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া সহ আরো অনেকে। পরবর্তীতে এস.এম.সি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন ১৯৭০-৮০ইং সনে এ.জে মনিরুজ্জামান, ১৯৮০-৯৫ইং সনে মীর বদরউদ্দিন আহাম্মদ, ১৯৯০-২০১০ইং সনে মোঃ মজিবর রহমান, জুলাই ২০১০-২০১৬ইং সনে মোঃ জাহিদ হোসেন, জুলাই ২০১৬-২০১৯ইং সনের মোঃ শাহ আলম মিয়া, ২০১৬-২০১৯ইং সনের নভেম্বর মাসে মোহাম্মদ আলী মন্টু এবং বর্তমান উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৎকালীন সময়ে উক্ত জমি বিদ্যালয়ের নামে দেওয়াতে বাড়ী মজলিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৮৮ সনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান মোঃ আহসান উল্লাহ, ১৯৯৩ সনের আগষ্ট মাসে নিগার সুলতানা, একই বছরের ডিসেম্বর মাসে মোঃ নুরুল হুদা, ১৯৯৫ সনের জানুয়ারী মাসে মোঃ আমিরুল ইসলাম, একই বছরের অক্টোবর মাসে মোঃ আব্দুল বারেক এবং ১৯৯৬ সনের মার্চ মাসের ৩০ তারিখে নিয়োগ পেয়ে অদ্যবধি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারগিস শামসুন্নাহার, ক্লাস্টার হিসেবে নিয়োজিত আছেন কানিজ ফাতেমা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১০ সনে সোনারগাঁও উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়। বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নানা কারনে বাড়ী মজলিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবহেলায় জর্জরিত। শত বছর পূর্ণ হলেও উক্ত বিদ্যালয়ে মাত্র চারতলা ফাউন্ডেশনের দ্বিতল একটি ভবন নির্মিত হয়েছে। গত ৪ বছর যাবৎ বিদ্যালয়টিতে কোন দপ্তরি না থাকায় নগদ টাকা ও গুরুত্বপুর্ণ অবকাঠামো চুরি হয়। এলাকাবাসী আরো জানান, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য নেই কোন আয়া। পূর্বের পুরোনো টিনশেড ঘরটিতে কোন শিক্ষা বা পাঠদান করা হয়না। টিনশেড ঘরটি অপসারনের জন্য টেন্ডার দেয়ার কথা থাকলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ের মাঠে ২/৩ ফুট পর্যন্ত পানি জমে থাকে। মেইন ফটকের সামনে ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড টাংক রোড থাকলেও আশেপাশের দোকানীরা সুযোগে ময়লা আবর্জনা ফেলে মেইন ফটকের সামনের স্থানটি ডাস্টবিন বানিয়ে রাখে। প্রধান শিক্ষক নারগিস শামসুন্নাহার দৈনিক খবরপত্রের প্রতিবেককে আরো জানান, শত বছর পূর্তির বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হলাম। আমাদের এই বিদ্যালয়টিতে বছরে সত্তর হাজার টাকা সরকারি ভাবে অনুদান আসে। এ টাকা দিয়ে ওয়ালে রং করতে হয়, আনুসাঙ্গিক আরো কাজে ব্যায় হয়। এ মুহুর্তে টিনশেড ঘরটি অপসারণ করা দরকার। টেন্ডার পাশ করা হলে সেই টাকায় ঘরটি সরিয়ে সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য দোলনা, স্লিপার বসানো এবং বঙ্গবন্ধু কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি, শিক্ষা উপকরণ, ব্যাঞ্ছ ও টেবিল বানানোর উদ্যোগ নিবো। সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেন, বড় বাজেট না থাকায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। এ মুহুর্তে বিদ্যালয়ে একজন দপ্তরি ও একজন আয়া খুবই প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দৌলতুর রহমান বলেন, পুরোনো টিনশেডটি অপসারনের জন্য টেন্ডার হয়েছে, দপ্তরি নিয়োগের বিষয়টি সরকারি ভাবে হয়ে থাকে।