জেলার লালমাইয়ের টিলাগুলোতে সবুজ পাতা মেলেছে চা গাছগুলো। পৌষের মিষ্টি রোদে নতুন কুড়িগুলো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। বছর দু’য়েকের মধ্য ডালপালাগুলো ঝুপড়ি হয়ে উঠবে। পরিপূর্ণ হবে গাছগুলো। গাছের ডাল থেকে কঁচি পাতা সংগ্রহ করা হবে। সেই পাতা থেকে হবে চা। চায়ের সুঘ্রাণে মনমাতাবে সবার। এমন স্বপ্ন নিয়েই কুমিল্লা লালমাই পাহাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি চা বাগান। চা বাগানের মালিক তারিকুল ইসলাম মজুমদার শখের বসেই কুমিল্লা লালমাই পাহাড়ের বড় ধর্মপুর এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে ছয় হাজার চা গাছ রোপণ করেছেন। তার ইচ্ছে এখানে চাপাতা প্রক্রিয়াকরণের কারখানাও করবেন। লালমাই পাহাড়ে উৎপাদিত চা দেশ ও দেশের বাহিরে বিখ্যাত হবে। সে লক্ষ্য গত বছরে মার্চ মাসে ৩ হাজার এবং জুন জুলাই মাসে আরো ৩ হাজার চা গাছ রোপণ করেন। অদূর ভবিষ্যতে আরো অন্তত ৬ হাজার একর জমিতে অন্তত ১০ হাজার চা গাছ রোপণ করার ইচ্ছে রয়েছে। তারিকুল ইসলাম মজুমদার বাসসকে বলেন, শখের বসে চা বাগান তৈর করেছি। বিটি ২ জাতের চা গাছ রোপণ করেছি। বর্তমানে এ জাতের চায়ের রং স্বাদ খুবই চমৎকার। বাজারে বিটি ২ জাতের চাহিদা ব্যাপক।
শ্রীমঙ্গলে আমার এক উপজাতি বন্ধু আছে। তার নাম জিডি সান। সে খাসিয়াদের রাজা। চা বাগান করতে সেই মূলত আমাকে সহযোগিতা করেছে। জিডি সান দলবল নিয়ে কুমিল্লায় আসেন। জিডি সান জানান, লালমাই পাহাড়ের মাটি চা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তারপর আমি চা বাগান করতে আগ্রহী হই। এর আগে শ্রীমঙ্গলে চায়ের বাগান করতে গিয়ে আমি সফল হই নি। তবে লালমাই পাহাড়ে চা বাগান শুরু করেছি। নিজের জেলায় নিজের বাড়ির কাছে। আশাকরি ব্যর্থ হবো না। তারিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এখানে আমার দেখাদেখি অন্যরা উদ্যোগী হবে চা বাগান করতে। পাশাপাশি আমি এখানে চা তৈরির কারখানা করার ইচ্ছে আছে। যেন লালমাই পাহাড়ে উৎপাদিত চা কুমিল্লা জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, লালমাই পাহাড় চা চাষের জন্য অনেক উপযোগী। লাল মাটির এ পাহাড়ে যদি বৃহৎ আকারে চা চাষের পরিকল্পনা করা যায় তাহলে এখান থেকে চা নিয়ে ভালো কিছু করা সম্ভব। সে লক্ষ্য পূরণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সাপোর্ট করবে।