ঈদের দিন, আগে ও পরে ৩ দিন করে ৭ দিন ফেরি দিয়ে সাধারণ ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের যাত্রীসেবা নিয়ে বৈঠক করেছি। আমাদের ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ২২ এপ্রিল। ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন (ঈদের দিনসহ ৭ দিন) পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া ফেরিতে সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান পারাপার বন্ধ থাকবে।
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ আছে, শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচলের একটা দাবি আছে চালকদের- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিমুলিয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই আমরা চেষ্টা করছি। এখানে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কারণ শিমুলিয়ায় যদি আমরা চালু করি তাহলে দুই বার পদ্মা সেতু ক্রস করতে হবে। সেটা তাদের অনুমতির প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, ‘দুই নম্বর হচ্ছে আমরা যদি সরাসরি চ্যানেল তৈরি করি সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের একটা অনুমতির প্রয়োজন আছে। সেটা অনুমতি সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু মাওয়া হাইওয়ে না ধীরে ধীরে সব হাইওয়েতে কিন্তু মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এটার গতিসীমাও কিন্তু লিমিট করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের হাইওয়ের মধ্যে ওভার মোটরসাইকেল চলাচলের কিন্তু ব্যবস্থা নেই। কাজেই এগুলো আমাদের মানতে হবে। এখন দেখা যায় ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। তার শারীরিক সক্ষমতা, মোটরসাইকেলের সক্ষমতা সবকিছু মিলিয়ে যে কোন মুহূর্তে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি চালিয়ে যাচ্ছে তার যদি সচেতনতা না থাকে সরকার তো এগুলো এভয়েড করতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। আর নিরাপত্তার জন্য সরকার যে যে পদক্ষেপগুলো নেবে, যতই সমালোচনা হোক সমালোচনার মুখেও মানুষকে রক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের শক্ত হতে হবে।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের বন্দরগুলোতে যাত্রীসেবার জন্য যে ওয়াশরুম সুবিধা আছে, সেগুলোর মান আরও বাড়াতে হবে। আরিচা, কাজিরহাট, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ায় আমরা ফেরি সংখ্যা বাড়িয়ে দিচ্ছি। হরিনা ও আলুবাজারেও ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হবে। সন্দীপ ও হাতিয়ার মতো উপকূলীয় এলাকায় সি ট্রাক চালু থাকবে। তাজউদ্দিন ও আইভি রহমান সেখানে নিয়মিত চলাচল করবে। কাজেই পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ নৌ-সেবা নিতে পারে, সে বিষয়ে আমরা আন্তরিক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় লঞ্চে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। ঈদের সময় লঞ্চে সেই নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হয়। বছরের অন্য সময় কম ভাড়া নেওয়া হয়।
পুরনো লঞ্চগুলো মালিকরা এরই মধ্যে সরিয়ে ফেলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আরও আধুনিক মানের লঞ্চ সংযুক্ত হচ্ছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি। অনেকে আশঙ্কা করেছিল পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর লঞ্চ ব্যবহার করবে না। কিন্তু কথাটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নৌপথে চলাচলের আগ্রহ এখনো কমে যায়নি। আগ্রহ আরও বাড়ছে। সে কারণে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ’র প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি, তারা ছুটিগুলো পর্যায়ক্রমে দেয়, যাতে নৌপথে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। অতীতে তারা যেভাবে ছুটি দিয়েছে, এবারও তারা যেন সেটি করে। আমাদের নৌপথই কেবল না, রেল ও সড়কপথেও তাতে চাপ কম পড়বে।