শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বগুড়া শেরপুরে আগুনে পুড়লো পঁচিশ বিঘা জমির ভুট্টা ইসলামাবাদে ভোট কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন বীর মুক্তিযোদ্ধার নির্মাণাধীন দোকানে সন্ত্রাসী হামলা বাগেরহাট নানান আয়োজনে মে দিবস পালিত ভালুকা বিশেষায়িত পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন বরিশালে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভুট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকেরা, দ্বিগুণ লাভের আশা নগরকান্দায় অগ্নিকান্ডে চারটি দোকান ঘর ভস্মীভূত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে না-কেন্দ্রীয় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার গলাচিপায় পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভা ও জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস পালিত

ফরিদপুরে পেঁয়াজের দাম কমায় ক্রেতাদের সন্তোষ প্রকাশ

বেলায়েত হোসেন লিটন বিশেষ প্রতিনিধি ফরিদপুর :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ মে, ২০২৩

ফরিদপুরের বিভিন্ন হাঁট বাজারে কয়েকদিনে পেঁয়াজের কিছুটা দাম কমায় পেঁয়াজ চাষীদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্রেতাদের মাঝে সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ফরিদপুরে কয়েকদিন ধরে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন হাঁট-বাজারে তিন-চার দিন আগেও যে পেঁয়াজ মণ প্রতি দুই হাজার ৫ শত থেকে দুই হাজার ৮ শত টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, তা এখন মণ প্রতি দুই হাজার ২ শত থেকে দুই হাজার ৪ শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম না কমলে আমদানি করা হবে-বাণিজ্য মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর ফরিদপুরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে বলে অনেকের ধারণা। শনিবার  জেলার বিভিন্ন হাঁট-বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৩ শত থেকে ৫ শত টাকা কম দামে বিক্রি হতে দেখা যায়। ফলে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত। সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে দেশি পেঁয়াজের। দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় ফরিদপুরের পেঁয়াজের হাট-বাজারগুলোতে কয়েক দফায় বেড়ে যায় দাম। দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে হঠাৎ আবার দাম কমতে শুরু করেছে। তবে আমদানির আগেই হঠাৎ এমন দরপতনে চিন্তায় চাষিরা। এভাবে দাম কমতে থাকলে লোকসানের আশঙ্কাও তাদের রয়েছে। যদিও পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি ভোক্তারা। তবে প্রতিমণ পেঁয়াজ গড়ে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৩০০/- টাকা দরে অর্থাৎ বর্তমান বাজারমূল্য বজায় থাকলে সবার জন্যই ভালো-এমন দাবি চাষি, ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের। তবে দাম কমায় পেঁয়াজ চাষীদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্রেতাদের মাঝে সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা সদরে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। হাটে পাইকারি দরে বিক্রি হয় পেঁয়াজ। পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা মেটায়। এ হাটে প্রতিমণ পেঁয়াজ ২ হাজার ২ শত থেকে ২ হাজার ৫ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত তিনদিনের তুলনায় মণে ৩ শত থেকে ৫ শত টাকা কম। নগরকান্দা উপজেলার ঈশ্বরদী গ্রামের পেঁয়াজ চাষী মাওলানা আব্দুল মান্নান দৈনিক খবরপত্রকে জানান, দীর্ঘদিন পর ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। আমদানি বন্ধসহ বাজারদর ঠিক থাকলে আগামীতে পেঁয়াজ চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়বে। এবার প্রায় ২ শত মণ পেঁয়াজ পেয়েছেন তিনি। দাম বাড়ায় ২০ মণ বিক্রি করেছেন। এ রকম দাম থাকলে চাষিদের জন্য ভালো, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের জন্য সহনীয় হয় বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে সালথার পেঁয়াজ চাষি এমারত হোসেন দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, গত দুই-তিন দিনে ভাল দাম পেয়ে কয়েক হাট মিলিয়ে দেড়শ মণ পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আজ হাটে ৩০ মণ বিক্রির জন্য এনেছি। কিন্ত দাম মণ প্রতি প্রায় ৫শত টাকা কমে গেছে। তবে এখনও যে দাম আছে তা মোটামুটি ভালো। আরও দাম কমলে লোকসান হবে কৃষকদের। এ অবস্থায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার দাবি জানান তিনি। বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম সাতৈর বাজারে এসেছেন পেঁয়াজ বিক্রি করতে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, দাম বেশি দেখে পাঁচ মণ পেঁয়াজ নিয়ে আসছি। গত হাটে যে পেঁয়াজ ২ হাজার ৭শত টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে, সেখানে একই পেঁয়াজ আজ দুই হাজার ৩০০ টাকা দাম বলছে। কী করবো ভাবছি। যেহেতু গাড়ি ভাড়া করে হাটে পেঁয়াজ নিয়ে আসছি, তাই বিক্রি তো করতেই হবে। মধুখালী উপজেলা সদর বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও আড়তের মালিক মোঃ আলম দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। হঠাৎ করে কয়েকগুণ দাম বৃদ্ধির পর আবার হঠাৎ দরপতন হয়েছে। মোকামে চাহিদা কম। আমদানির খবর শুনেই মূলত পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে প্রতিমণে হাজার টাকা কমেছে। শনিবার ভালো মানের পেঁয়াজ দুই হাজার ১০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে কিনেছি। তবে আমার ধারণা আমদানির কথা শুনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণেই বাজারের এই অবস্থা। তিনি আরও বলেন, দুই হাজার ১০০ থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০০ টাকা মণ প্রতি পেঁয়াজের দাম থাকলে ভোক্তা, ব্যবসায়ী ও কৃষকের জন্য সুবিধা। তাছাড়া দেশের কৃষকদের ঘরে যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুত আছে। ফলে এখন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখা ভালো। এ বিষয়ে নগরকান্দা সদর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও ব্যাবসায়ী মোঃ দেলোয়ার হোসেন দুলু দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকলে দাম একটু কমবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তর ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক মোঃ সোহেল শেখ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী, অধিক মুনাফালোভী ও বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যারা লাভবান হতে চান তাদের বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জিয়াউল হক বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফরিদপুরে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৪০ হাজার ৯৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল। তবে চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হলেও এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। দামের বিষয়ে আমাদের তো কোনো হাত নেই। আমরা ভালো ফলনে এবং বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও সহোযোগিতা করে আসছি নিয়মিত।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com