বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বর্ষা শুরুর আগেই উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ১০ দিনের ভাঙনে অন্তত ১৫ পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। ভেঙে গেছে বিপুল জমির ফসল। ভাঙনের কারণে চার গ্রামের অন্তত ৩২ হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। হুমকির মুখে রয়েছে ১৭ শিক্ষা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া নৌঘাট সংলগ্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেশ এলাকাজুড়ে ভাঙন চলছে। গত কয়েকদিনে অন্তত ১৫ পরিবারের সদস্যরা বাড়িঘর ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন। কৃষি জমি যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে। নদী তীরে বসবাসকারীরা ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছেন। ভাঙন আতঙ্কে তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া, টেংরাকুড়া, উত্তর টেংরাকুড়া, পাকেরদহ, মোল্লা পাড়া ও গজারপাড়ার ৩২ হাজার মানুষ। এসব গ্রামের ১০টি মসজিদ, তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র হুমকিতে রয়েছে। ভাঙন হুমকিকে থাকা চর ঘাগুয়া গ্রামের জেলে ইব্রাহিম প্রামানিক জানান, গত ২০ বছরে সাতবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এ বছরের ভাঙনে যে কোনও সময় তার বাড়ি যমুনায় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি জানান, স্বামী-স্ত্রী পালা করে রাত জেগে থাকেন। শিগগিরই তিনি ঘরবাড়ি অন্যত্র স্থানান্তর করবেন। গত ১০ বছরে চারবার নদী ভাঙনের শিকার মাহা আলম জানান, গত ১০ দিন আগে তার বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে অর্ধ কিলোমিটার দূরে সরে গেছেন। তিনি জানান, তার মতো আরও ১৫টি পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। এখনই নদী ভাঙন ঠেকাতে না পারলে কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া গ্রামটি যমুনায় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রামবাসীর পক্ষে অবিলম্বে ভাঙন ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়াতে নদী ভাঙনের খবর পেয়েছেন। ভাঙনরোধে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।