পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
গোপালপুরে সড়কে অবৈধভাবে বাসস্ট্যান্ড গড়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহতের ঘটনায় সর্বস্তরের জনগণ প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে টানা তিন ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ রাখে। সোমবার সকালে পৌরশহরের নন্দনপুর বাসস্ট্যান্ট এলাকায় প্রধান সড়কে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
জানা যায়, বাস ও ট্রাক মালিক সমিতির প্রায় পাঁচশত বাস ও ট্রাক নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে না রেখে নন্দনপুর রাধারানী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সমেশপুর পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত অর্ধকিলোমিটার প্রধান সড়কে এলোপাতাড়ি রেখে দেয়। সরু সড়কের অর্ধেক জায়গা জুড়ে এসব বাসট্রাক রাখায় বিপরিত দিক থেকে কোন বড় যানবাহন এলে সাধারণ পথচারিরা পর্যন্ত হাঁটাচলা করতে পারেনা। যে কারণে এখানে মাঝে মাঝেই ঘটে দুর্ঘটনা। রবিবার সকালে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মেহেদী হাসান মিরাজ নামে এক মটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়। এ নিয়ে ৬ মাসে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭জন। আহত শতাধিক। মেহেদী হাসান নিহতের ঘটনায় এলাকায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে গোপালপুর সরকারি কলেজসহ স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সাথে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ যোগ দেয়। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ও সড়কে বাসট্রাক রেখে মানুষ হত্যার দায়ে মালিকদের শাস্তির দাবি জানায়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার মেয়র রকিবুল হক ছানা, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন ও মঈন উদ্দীন বাবু, যুবলীগ নেতা জিহাদ হাসান, ছাত্রলীগের ইকবাল হোসেন ও আলমগীর রানা প্রমুখ। গোপালপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ মানিকুজ্জামান অভিযোগ করেন, প্রধান সড়কের পাশেই গোপালপুর সরকারি কলেজ, রাধারাণী গার্লস হাইস্কুল এবং রাধারানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। প্রতিষ্ঠানের গেটের সামনে শত শত ট্রাকবাস যমদূতের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে কলেজে আসাযাওয়া করতে পারেনা। প্রায়ই দুর্ঘটনায় তাদের কেউ না কেউ হতাহত হয়। চোখের সামনে প্রায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। প্রশাসনের নিকট বহুবার অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনই প্রতিকার মিলছেনা। স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, এ যেন মগের মুল্লুক। কারো কথাই বাসট্রাক মালিকরা শুনছেননা। প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। কেউ নিহত হলে কয়েকদিন যানবাহন নির্দিষ্ট বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে রাখে। তারপর আবার সড়ক দখল করে আগের মতোই সড়কে রেখে দেয়। থানার ওসি মোশারফ হোসেন ও গোপালপুর সার্কেলের এ এসপি মোনাদির ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ^াস দিলে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে দেয়। ইউএনও আসফিয়া সিরাত জানান, মালিকরা যাতে প্রধান সড়কের উপর বাসট্রাক না রাখেন এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটে এজন্য আগামীকাল উপজেলা পরিষদ হল রুমে সকল পেশা ও শ্রেণির প্রতিনিধিদের নিয়ে এক জরুরী সভা ডাকা হয়েছে।