সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন

নোয়াখালীতে উদ্যোক্তা তৈরিতে যুব সমাজ স্থানীয়দের মতামত বিষয়ক কর্মশালা

হান্নান শাকুর নোয়াখালী :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

যুব সমাজকে সক্রিয়ভাবে উদ্যোক্তামূলক (আত্মকর্মসংস্থান তৈরির) কাজে জড়িত করে ব্যক্তি, সমাজ এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে দিনব্যাপী গত ৩০ মে ও ৪ জুন ২০২৩ তারি যথাক্রমে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার রামগতি ব্রাঞ্চ ও ফাউন্ডেশন অফিস, হাতিয়ায় ”উদ্যোক্তা তৈরিতে যুব সমাজ-স্থানীয়দের মতামত” বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ল্যাংচেস্টার ইউনিভার্সিটির সাথে বাংলাদেশের দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা (ডিইউএস) এবং সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরী রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। ”উদ্যোক্তা তৈরিতে যুব সমাজ” ধ্যান ধারনাটি ”লিভিং ডেল্টা রিসার্চ হাব” নামের বড় একটি গবেষণার অংশ যেটি বাংলাদেশ, ভারত ও ভিয়েতনাম এই তিনটি দেশর নদীমাতৃক বির্স্তীণ অঞ্চলের পরিবেশগত ও সামাজিক পরিবর্তন এবং সম্ভাব্য টেকসই উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করছে। গবেষণার বিষয়গুলোর মধ্যে আছে স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে উন্নয়ন, ডেল্টা কমিউনিটির অংশীদায়িত্ব (বৈষম্য দূরীকরণ), পরিবেশগত ঝুঁকিপ্রবণ এলাকাগুলো সনাক্তকরণ, সাধারণ মানুষের জীবিকার পরিবর্তন বিশ্লেষণ এবং স্থানীয় যুব সমাজের উন্নয়ন। কিভাবে এই পরিবর্তনগুলো আরো টেকসই করা যায় সেটির অন্বেষণ। এই গবেষণার অন্যতম উদ্দেশ্য বিশেষ করে স্থানীয় যুব সমাজকে উদ্যোক্তামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করার মাধ্যমে কি করে মানুষের জীবিকার উন্নয়ন করা সম্ভব সেই বিষয়ে গভীর অনুসন্ধান চলছে। বিস্তারিত: যঃঃঢ়ং://িি.িষরারহমফবষঃধং.ড়ৎম) এই ওয়েব সাইট থেকে জানা যাবে। এই গবেষণা ও কর্মশালা পরিচালনায় যুক্তরাজ্যের ল্যাংচেস্টার ইউনিভার্সিটির সাথে বাংলাদেশের দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা (ডিইউএস), প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি, পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি), ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, মানবমুক্তি সংস্থা (এমএমএস), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরী রিসার্চ এন্ড ডেভোলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং সুশীলন যুক্ত রয়েছে। দেশের বৃহত্তর ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে পর্যাক্রমে লক্ষীপুর, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশেষ ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে একটি কর্মশালায় আঞ্চলিক বক্তব্যগুলো তুলে ধরা হবে। উক্ত কর্মশালায় দুই জাগায়ই ১১ জন করে স্থানীয় উদ্যোক্ত অংশগ্রহণ করে। হাতিয়া অঞ্চলের উদ্যোক্তা মো: সারোয়ার হোসেন হৃদয়(২৯) বলেন, ”বর্তমানে আমার একটি এগ্রো ফার্ম রয়েছে। ফার্মে বিভিন্ন জাতের মুরগি, বেইজিং হাঁস আছে। পাশাপাশি আমার অনলাইন ব্যবসা রয়েছে। যে জায়গায় যে পণ্য বিখ্যাত সে জায়গা হতে আমি যে সকল পণ্য সংগ্রহ করে হাতিয়া সহ পুরো বাংলাদেশে বিক্রি করি। এক্ষেত্রে আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যেমন আমি রাজশাহী হতে ১কেজি ৫০ টাকা দিয়ে কিনে হাতিয়া পর্যন্ত আনতে ১১০ টাকা খরচ পড়ে। পরবর্তীতে হাতিয়াতে এতো টাকায় কেউ আম কিনতে আগ্রহী নয়। এছাড়াও হাঁস-মুরগির ক্রেতার সংখ্যা বাড়লেও এখনো উপযুক্ত বাজার সৃষ্টি হয়নি। এবং এক্ষেত্রে গৃহপালিত প্রাণীর খাবারের দাম বেড়ে যাওয়াও একটি সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ”রামগতির উদ্যোক্তা নাজমা বেগম(৩৮) বলেন, ”আমি সহ আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫। আমার স্বামী মাছ ধরে এবং নদীতে মাছের অভিযান চলাকালে গাড়ি চালায়। তারপরও পরিবারের খরচ চালাতে কষ্ট হয়। পরবর্তীতে আমি দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা হতে ৫০,০০০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ২টা গরু কিনি। এখন আমি গরুর দুধ বিক্রি করে কিছু আয় করি এবং মাসিক কিস্তি চালায়। আমার পরিবারের চাহিদা মিটাতে এবং কিছু টাকা আয়ের জন্য একটি গরুর খামার করার ইচ্ছা রয়েছে। এক্ষেত্রে আমি যে সমস্যার জন্য এগিয়ে যেতে পারছিনা, তাহলো আর্থিক সমস্যা, প্রশিক্ষণ না পাওয়া এবং আমাদের এদিকের জমি নিচু হওয়ার কারনে জোয়ারের পানি ওঠা। ”দিনব্যাপী উক্ত কর্মশালাটিতে বর্তমানে উদ্যোক্তারা তাদের কর্মকান্ড বাস্তবায়নে যে সকল ঝুঁকির সম্মুখিন হচ্ছেন তার থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কেও আলোচনা হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com