ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে তাপমাত্রাসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের টিকা ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক ও টিকা কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে দিচ্ছেন বহনকারীরা।সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে উপজেলা ইপিআই টেকনিশিয়ান এর উপস্থিতিতে টিকাগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব থাকলেও তা তিনি করেন না। সরকারের উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্বের অবহেলার অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জ উপজেলা ইপিআই টেকনিশিয়ান শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নিজে উপস্থিত থেকে তাপমাত্রা মেপে টিকা পোটারদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি কখনই সকালে এসে তা করেন না।
স্বাস্থ্যবিভাগের নিয়ম-নীতি কে উপেক্ষা করে তিনি নিজের ইচ্ছা মতো অফিস করেন। ফলে টিকা বহনকারী পোটাররা নিজের মতো টিকা বের করে লেজার খাতায় লিখে বিভিন্ন কেন্দ্রে নিয়ে যান। সরোজমিনে গতকাল রবিবার সকাল ৬ টার সময় কালিগঞ্জ হাসপাতালের বহির্বিভাগের ২১নং ইপিআই কোল্ড রুমের সামনে কয়েকজন টিকাবহনকারী পোটারকে বিভিন্ন ধরণের টিকা নিয়ে মেঝেতে ফেলে রেখে সে গুলো ধীরে ছোটো বাক্সে ঢুকাতে দেখা যায়। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিবেদককে তারা জানায়, আমারাই ঘর খুলে লেজার খাতায় লিখে টিকা নিয়ে যায়। শহিদুল স্যার আসেন না। ডাঃ আলমগীর স্যার আমাদের বলেছেন শহিদুল স্যারের কাছ থেকে টিকার বাক্স বুঝে নিতে ও বুঝিয়ে দিতে। কিন্তু ইপিআই স্যার না আসায় আমাদেরকেই সব করা লাগে। ইপিআই কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের দায়িত্বের অবহেলার কারণে এক দিকে যেমন সরকারের লক্ষ কোটি টাকার টিকার সঠিক মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অন্যদিকে এই টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। পূর্বে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।বিশেষ করে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর এই কর্মকর্তার ধূমপানরত অবস্থায় নারীর শরীরে টিকা দানের ছবি ও ভিডিও দেশজুড়ে ভাইরাল হয়। তবুও বিতর্কিত এই কর্মকর্তা নিজ উপজেলায় থেকে নানা অনিয়ম করে বহালতবিয়াতে চাকরি করে গেলেও তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে আজও দেখা যায়নি। এমনকি তিনি বদলিও হন না। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি একটু অসুস্থ থাকায় সময় মতো যেতে পারি নি। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেন বলেন, ইপিআই কর্মকর্তাকে ইতিপূর্বে দায়িত্ব অবহেলার কারণে আমি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছি। বারবার সতর্ক করার পরও তিনি নিয়মিত দায়িত্ব¡ পালন করতে ব্যার্থ হচ্ছেন। এ ব্যাপারে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব।