আজ মঙ্গলবার ১১ জুলাই মার্কিন দলটি ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। সফররত মার্কিন দলের সঙ্গে মূল বৈঠকটি হবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গেও বৈঠক হবে মার্কিন দলের। এছাড়া দলটি কক্সবাজারে দিনব্যাপী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) মার্কিন দলটি ঢাকায় এসে পৌঁছাবে এবং শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে ঢাকা ত্যাগ করবে। এই সময়ের মধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতাসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করতে পারে মার্কিন দলটি।
এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার কাজের ক্ষেত্রটি অনেক বড়। তিনি বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়গুলোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। এছাড়া মানবপাচার বিষয়টিও তার কাজের অন্তর্ভুক্ত। ফলে মার্কিন দলটির প্রতিটি বৈঠকের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
তিনি জানান, উজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠকের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক: পররাষ্ট্র সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা উজরা জেয়ার মূল বৈঠকটি হবে মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। সেখানে রোহিঙ্গা, শ্রম পরিস্থিতি, বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা-, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, নির্বাচন, বাকস্বাধীনতাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিয়ে অনেক কৌতূহল আছে যুক্তরাষ্ট্রের। আমরা এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ বিষয়ে তাদের অবহিত করতে চাই।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় সহিংসতাবিহীন নির্বাচন। কিন্তু অন্যদিকে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সহিংসতাবিহীন নির্বাচন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে র্যাবের আগ্রহের ঘাটতি কম হতে পারে। এ বিষয়টিও মার্কিন দলকে অবহিত করা হবে বলে তিনি জানান।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, শ্রমাধিকার প্রতিষ্ঠায় অনেক কাজ হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু এর স্বীকৃতি মার্কিন পক্ষ না দেওয়ায় বাংলাদেশের মধ্যে হতাশা রয়েছে –যা তাদের অবহিত করার হবে। এছাড়া নির্বাচন নিয়েও বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: উজরা জেয়ার দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নিরাপত্তা খাত এবং এ বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হবে।
এ বিষয়ে আরেক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখাশোনা করে থাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবং এ বিষয়ে আগ্রহ আছে যুক্তরাষ্ট্রের। মানবপাচার প্রতিরোধকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র এবং এটির দায়িত্বপ্রাপ্ত হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে এ বিষয়ে সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতা আছে এবং সেগুলো জোরদার করার বিষয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। এছাড়া নির্বাচনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও তিনি জানান।
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে। একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিএসএ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ অনেক দিনের এবং এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি সংশোধন করা হবে।
এছাড়া নির্বাচন সংক্রান্ত আইন এবং এর প্রয়োগসহ অন্যান্য নির্বাচনি বিষয় নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সুযোগ আছে।