মেধাবীদের মিলনমেলা বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। এখানে গবেষণা ও নতুন নতুন আবিষ্কার হবে, হবে মেধাবীদের মিলনমেলা; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মৌলিক কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। গবেষণার জায়গায় স্থান পেয়েছে সরকারি চাকরিপ্রাপ্তির লক্ষ্যে পড়াশোনা। ব্যাহত হচ্ছে গবেষণা কাজ। গবেষণার বদৌলতে রাজনীতিতে কলুষিত হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে পরমাণু বিজ্ঞানী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা, প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ (সুধা) মিয়ার নামে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের হাত গুটিয়ে বসে থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজে গতি আনতে সরকার ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ শুরু করে। তবে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন; কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ প্রকল্পের নকশা ও পরামর্শক পরিবর্তন এবং নির্মাণব্যয় বাড়িয়ে নতুন করে বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়। জানা যায়, উপাচার্য ড. এ কে এম নুর-উন নবীর সময়ে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ দ্রুত এগোচ্ছিল। পরবর্তীকালে উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়ে ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নির্মাণাধীন দুইটি ভবনের নকশা পরিবর্তন ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি বরাদ্দের আবেদন করেন। ভবন নির্মাণব্যয় ২৬ কোটি ৮৭ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা প্রস্তাব করেন তিনি। নতুন করে বরাদ্দের আবেদন জানালে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ সময় পার হলেও কাজগুলো শুরু করতে প্রশাসনের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান উপাচার্য বাকি কাজ শুরুর বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেননি। সরকারের এই প্রজেক্টে দুর্নীতি হওয়ার পরও কারো শাস্তি না হওয়া ন্যক্কারজনক বিষয়। অনিয়মের অভিযোগ থাকলে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় এনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত চালু করা হোক। পূর্ণ হোক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীদের স্বপ্ন। লেখক :শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়