বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি’র ১ দফা দাবির সাথে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষসহ সর্বস্তরের জনগণ সমর্থন জানিয়েছেন। ২৭ জুলাইয়ের মহাসমাবেশে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ঢল নামবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি’র চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসূচির ওপর সরকারি দলের সন্ত্রাসীদেরকে ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। দেশের জেলা সদর ও মহানগরসহ হাটবাজার-গঞ্জে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর হামলার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আর এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, জনগণের আস্থাহীন এই অবৈধ সরকার সন্ত্রাস, হামলা ও মামলার এক শৃঙ্খল তৈরী করে দেশের জনগণকে বন্দী করে রেখেছে এবং গণতন্ত্রকে অন্ধকার কূপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আসলে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বহুমত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা শুনলেই আওয়ামী লীগ মূর্ছা যায়। আওয়ামী লীগ বিএনপি’র গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলা চালিয়ে একটি সঙ্ঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপি’র কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হচ্ছে না, তবে কর্মসূচির নামে রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই- বিএনপি’র কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত, অথচ একই দিন আওয়ামী লীগ শান্তিসভা কিংবা শান্তিমিছিল করলে তখন কি জনদুর্ভোগ হয় না? বিএনপি’র কর্মসূচির দিন কেন আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করে? কেন আওয়ামী লীগ ৭১ -এর শান্তিকমিটির মতো শান্তি সমাবেশ বা শান্তিমিছিল করে? এটি করার উদ্দেশ্য- বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসা নেতাকর্মীদের বাধা প্রদান করা, হামলা করা এবং তাদেরকে হত্যা ও জখম করা।
তিনি বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আরো বলতে চাই- ২২ জুলাই তারুণ্যের সমাবেশ থেকে বিএনপি’র ২৭ জুলাই মহাসমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা দেয়ার পরপরই যুবলীগের ২৪ জুলাইয়ের সমাবেশ পরিবর্তন করে ২৭ জুলাই করা হলো কেন? এর কী জবাব আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে? কোন অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই যুবলীগের সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ১ দফা দাবিতে বিএনপি’র উদ্যোগে আগামী ২৭ জুলাইয়ের মহাসমাবেশ সফল ও সার্থক করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় তিনি সারাদেশে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনী কর্তৃক হামলা এবং মামলার বিবরণ তুলে ধরেন। ১৮ ও ১৯ জুলাই পদযাত্রা এবং ২২ জুলাই ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আহত, নিহত ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংখ্যা-
আহত : প্রায় ৪ হাজার ১০০। নিহত : ২ জন। গত ১৯ মে হতে আজ পর্যন্ত বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী-মোট মামলা : ৩১৫টি মোট গ্রেফতার : ১ হাজার ৩৫০টি মোট আসামি : ১ হাজার দুই শ’র অধিক নেতাকমী