কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) অর্থ সম্পাদক দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস সাংবাদিকবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর ২টায় বাহাদুর শাহ পার্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতি ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির যৌথ অংশগ্রহণে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের অন্তর্নিহিত কারণ হল ভিসি আব্দুল মঈনের দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গাওয়ার সংবাদ করায় তাকে বহিষ্কার করা। কুবি উপাচার্য এখানে দুইটি অপরাধ করেছেন। অবিলম্বে ইকবাল মনোয়ারের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।
জবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব অপূর্ব চৌধুরী বলেন, যে ব্যক্তি দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গাইতে পারেন আবার সেটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহিষ্কার করতে পারেন তিনি কখনো উপাচার্য হতে পারেন না। উপাচার্য হবেন আন্তরিক, সহানুভূতিশীল ও মার্জিত ব্যবহারের অধিকারী। ইকবালকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুবি উপাচার্য সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরতে চেয়েছেন। যা কখনো মেনে নেওয়া হবে না। আগামী ৩দিনের মধ্যে ইকবালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানাই। অন্যথায় ধারাবাহিকভাবে আমরা আরও কঠিন কর্মসূচি দিব।
জবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য তানভীর আহমেদ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কিভাবে দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গান সেটি বোধগম্য না। আবার সেটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের মাধ্যমে তার জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছেন কুবি উপাচার্য। উনার এহেন কর্মকাণ্ডে আমরা শঙ্কিত। তিনি মূলত সাংবাদিকতা রোধ করার পায়তারা করেছেন। এটি সফল হতে দেওয়া যাবেনা। ইকবালের ছাত্রত্ব দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।
কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির (কনকসাস) সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ বলেন, মনোয়ার ইকবাল দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে তার লেখনীর মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা ও অনিয়মের সংবাদ তুলে ধরেছে। সম্প্রতি ‘দুর্নীতি হচ্ছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন ইকবাল করেছে সেখানে যদি কোন অসংগতি থেকে থাকে তাহলে কুবি উপাচার্যের উচিত ছিল প্রতিবাদলিপি দেওয়া। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে একজন শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি বহিষ্কারাদেশ দেওয়া সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইয়াছিন মোল্লা বলেন, দৈনিক যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ার সংবাদটিতে যদি কোনো ভুল তথ্য প্রকাশ করে থাকেন তাহলে উপাচার্য এই পত্রিকায় প্রতিবাদলিপি দিতে পারতেন বা আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে সরাসরি ইকবালের বিরুদ্ধে বহিষ্কার আদেশ জারি করেন যা ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে । আমি চাই অতি দ্রুত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে তার স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে দেওয়া হোক। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হোক।