দুই দিনের টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। একই সঙ্গে নদীর অববাহিকা, চর, দ্বীপচরের মানুষদের সতর্ক থাকাসহ প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা হচ্ছে ৫২.১৫ সেন্টিমিটার। সেখানে ৫২.২৫ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮.৭৫ সেন্টিমিটার। সেখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২৯.৮ সেন্টিমিটার। এদিকে, রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলার ২০টি চরা লের গ্রামে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে গত দুই মাসে তৃতীয় দফায় আমন ধানসহ শষ্য ক্ষেতগুলো তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর, নোহালী ও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও কাউনিয়া উপজেলার ধুসমারার চর, আজম খাঁ চর, হাইবত খাঁ গোনাই, পল্লীমারী, চর একতা, চর মিলনবাজার, গোপীকাল্লা, ডালার চর ও চর গোদাইয়ে পানি প্রবেশ করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারতের উজানে পানি বৃদ্ধির কারণে গজলডোবা ব্যারাজের সবগুলো গেট পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই খুলে দেওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি মারাত্মকভাবে বেড়ে চলেছে।
তিনি আরও জানান, তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রবল স্রোতের কারণে নদী তীরবর্তী আশেপাশের গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। নতুন নতুন গ্রামে প্লাবিত হওয়ায় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টার রংপুরে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মোস্তাজিজার রহমান বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। ফলে রংপুর অ লে বিশেষ করে তিস্তার তীরবর্তী নি¤œা লগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।