দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন নতুন করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের চিন্তা করছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে রোডম্যাপ অনুযায়ী যখন যে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এই মুহূর্তে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার কোনও চিন্তা-ভাবনা নেই।’
গতকাল সোমবার (১১ সেপ্টম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সুধীজনদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইসি। ইসি আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যারা চিন্তা-ভাবনা করেন অথবা বিভিন্ন সময় নির্বাচন করেছেন; তাদের কাছ থেকে আমরা ফিডব্যাক নেবো। আমরা যে কাজ করলাম, এতে তাদের মতামত কী। যদি তাদের কোনও গুড সাজেশন থাকে, ভালো নির্বাচনের জন্য আরও কী করা যেতে পারে— এগুলোই শুনবো।’
অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি না আসলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে ইসির সাবেক এই সচিব বলেন, ‘এগুলো আমাদের বিষয় না। সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিষয়টা রাজনৈতিক, রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টা দেখবে; কিছু করার আছে কি-না। সংবিধান তো ইসিকে এই সমস্ত বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কোনও সুযোগ দেয়নি। সংবিধানের বাইরে তো কিছু করার এখতিয়ার নেই ইসির।’ সিসি ক্যামেরা না রাখলে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী, সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে এমন কোনও বিধি-বিধান নেই। নির্বাচন অনিয়ম হয়— এমন অভিযোগ দেখার জন্য আমরা সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেছি। অভিযোগ আসলেই সঠিক কিনা— তা দেখার জন্য। কিন্তু এটাতো কোনও ভোটের প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না।’
জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এতো সিসি ক্যামেরা কে দেবে? এতো সিসি ক্যামেরা দেওয়ার জন্য তো কোনও প্রতিষ্ঠান নাই। কয়েকটা সংগঠন মিলেও এতো সিসি ক্যামেরা দিতে পারবে না। প্রায় দুই, আড়াই লাখ সিসি ক্যামেরা কীভাবে দেবে? ইন্টারনেটের সংযোগ কীভাবে দেবে? কীভাবে এতো ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করবেন? এটা তো সম্ভব না। ঝূঁকিপূর্ণ আসনেও সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা সম্ভব না। কারণ অনেক কেন্দ্র থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ঠিক হয় নির্বাচনের আগে, ওই সময় বাজেট আনা অসম্ভব।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের শাস্তি সিদ্ধান্ত অনেক বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে। কারও কারও শাস্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। যারা ক্ষমা করে দিয়েছেন, আমরা (তাদের) বলেছি— ক্ষমা করার কোনও বিধান নেই। শাস্তি কম হলেও দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেন, তাদের প্রতি আস্থা না রাখার কোনও কারণ নেই। যতগুলো নির্বাচন করেছি শাস্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে। কোথাও সামান্য ত্রুটি হলে আমরা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। দায়িত্ব পালনে আমাদের শতভাগ আন্তরিকতা ছিল এবং আমরা মনে করি যে জনগণ সেটা ভালোভাবে নিয়েছে।‘