বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

কালীগঞ্জে সম্পত্তি হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে শিশু ঐশিকে গলাটিপে হত্যা করে মামা

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

চলতি বছরের ২৫ মার্চ দুপুর। সেদিন স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে অজ্ঞাত আনুমানিক ৬ বছরের এক কন্যাশিশুর অর্ধগলিত বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করলেও পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরদিন ক্লুলেস হিসেবে থানার এক এসআই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা (নং ১৬) রুজু করেন। পরে পুলিশ সেই মামলার তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের প্রায় ৬ মাস পর পুলিশ সেই ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেন। ওই অজ্ঞাত কন্যা শিশুর মরদেহটি ঐশি মন্ডল নামে এক শিশুর। তার মায়ের ডিএনএ টেস্ট করে পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত হয়। সে উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের সেন্টু বিকাশের মেয়ে এবং ধনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিং মে। এ সময় কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সাব্বির রহমান ও মামলার বাদী এসআই ফজলুল হক উপস্থিত ছিলেন। উখিং মে জানান, পুলিশ তদন্তকালে জানতে পারে মরদেহ উদ্ধারের ৩ দিন আগে ঐশি নিখোঁজ হয়। তবে পরিবারের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য ঐশির মা তার সাবেক স্বামী সেন্টু মন্ডল ও তার মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে অপহরণ মামলা করেন। যে কারণে বিষয়টি থানা পুলিশ অবগত ছিল না। তিনি আরো জানান, ঐশির বাবা সেন্টু মন্ডলের সাথে মা বিমা রাণী দাসের ৫ বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
ঐশির মৃত্যু আড়াই মাস আগে বিমা রাণী দাস সন্যাসী কুমার সাহা নামের একজনকে বিয়ে করে উপজেলার জামালপুর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থেকে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতো। এদিকে ঐশির মায়ের ফুফু অঞ্জলি রাণী বিশ^াস নিঃসন্তান হওয়ায় তার কাছেই নানা বাড়ি ধনপুরে বড় হচ্ছিল ঐশি। অঞ্জলি রাণী বিশ^াস নিজের সন্তানের মতই তাকে লালন-পালন করছিলেন।
তার সম্পত্তি ঐশিকে লিখে দিতে চেয়েছিলেন। ঐশির মামা বিজয় চন্দ্র বিশ^াস সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে খালু অসিত চন্দ্র মিস্ত্রীর সহযোগীতায় তাকে ২২ মার্চ আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯টায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে গলা টিপে হত্যা করে। পরে সেই মরদেহ একটি বস্তায় মুখ বন্ধ করে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে খালুর সিএনজি চালিত অটোরিকসা করে নির্জন এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেয়। কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, মামা ও খালুকে পুলিশ কালীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এছাড়া খালু (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে বলে তিনি জানান। গ্রেফতারকৃত মামাকে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com