সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান ওরফে চিনুর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলা করা হয়।
বিসিবির বর্তমান চিফ ম্যাচ রেফারি রকিবুলের মামলা দায়েরের পরই বিসিবির মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপস মীমাংসার দিকে মোড় নেয়। আলোচনায় বসেন রকিবুল ও চিনু। আলোচনা ফলপ্রসূও হয়। নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন চিনু। এরপর মামলা প্রত্যাহার করে নিলেন রকিবুল।
গতকাল সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে মামলার বাদি রকিবুল হাসান ও আসামি শওকাতুর রহমান চিনু উপস্থিন হন। এরপর রকিবুলের আইনজীবী আল মামুন রাসেল মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
রকিবুলের আইনজীবী আল মামুন রাসেল বলেন, ফেসবুকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্যাপ্টেন ও বর্তমান চিফ ম্যাচ রেফারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসানকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান চিনুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিসিবির মধ্যস্থতায় মামলার বাদি রকিবুল ও আসামি চিনুর মধ্যে এ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি উভয়পক্ষ স্বীকার করে। আম্পায়ার চিনু অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। আজ রকিবুল হাসান ও চিনু আদালতে উপস্থিত হন। এদিন রকিবুল মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
গত ৩১ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে বাদি হয়ে এ মামলার আবেদন করেন রকিবুল হাসান। এদিন আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার আবেদনে বলা হয়, রকিবুল হাসানকে নিয়ে ‘মানবতা আজ কোথায়’ নামের পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। পোস্টের হেডলাইন হলো, ‘চোর যখন নীতি বাক্য শুনায়’। ভিডিওটি সুব্রত চৌধুরী নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয়। সেই পোস্টে কমেন্ট করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান চিনু। তিনি কমেন্টে বলেন, দাদা, এই লোকটার উত্থানের পেছনে তোমাদের অবদানই বেশি। উনি বীর মুক্তিযোদ্ধা কখনো ছিলেন না! অথচ মিডিয়ার কল্যাণে ৫০ বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম? কি বিচিত্র এই দেশ! সেলুকাস…)। এই কমেন্টটি করা হয় গত ১৫ আগস্ট। এমন মিথ্যা ও অসৌজন্যমূলক মন্তব্যে তার (রকিবুলের) ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে অর্জিত সুনামের ক্ষতি করা হয়েছে। এর আগে গত ২০ আগস্ট চিনুকে তার মন্তব্যটি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার এবং জনসমক্ষে রকিবুলের কাছে ক্ষমা চাইতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন রকিবুল হাসান। নোটিশের অনুলিপি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিইও ও আম্পায়ারস কমিটির চেয়ারম্যানকেও পাঠানো হয়। সূত্র : বাসস