পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) মিরপুর সাড়ে এগারো এলাকা থেকে সোমবার ভোর রাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে (অব.) গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যেই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাজেদের গ্রেফতার দেশবাসীর জন্য মুজিববর্ষের শ্রেষ্ঠ উপহার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যেসব দণ্ডপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ডাদেশ কার্যকর করার অপেক্ষায় ছিলাম তাদেরই একজন ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে। কিছুক্ষণ আগে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত থেকে তাকে হাজতবাসের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং সেই জায়গায় তাকে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তার স্ত্রী সানা বেগম, বাড়ি নম্বর ১০/এ, রোড নম্বর-০১, ক্যান্টনমেন্ট আবাসিক এলাকা। তিনি সেখানেই বসবাস করতেন। আমাদের গোয়েন্দাদের কাছে তার সব তথ্য ছিল।’
‘১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সময় এই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ এবং নূর এবং রিসালদার মুসলেহউদ্দিন- এই তিনজন সেখানে ছিলেন। আরও কয়েকজন ছিলেন। এই খুনি শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনে অংশগ্রহণ করেননি। তিনি জেলহত্যায়ও অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে আমাদের জানা রয়েছে। খুনের পরে তিনি জিয়াউর রহমানের নির্দেশ মোতাবেক বঙ্গভবনে এবং অন্যান্য জায়গায় কাজ করেছেন।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা আশা করি, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তার দণ্ডাদেশ কার্যকর করতে পারব। যারা যারা এই কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ দিয়ে আমি মনে করি, মুজিববর্ষের একটা শ্রেষ্ঠ উপহার আমরা দেশবাসীকে দিতে পেরেছি।’
‘তৎকালীন জিয়াউর রহমান সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের বদলে তাদের নানাভাবে পুরস্কৃত করেছে এবং ইনডেমনিটি বিলের মাধ্যমে তাদের যাতে বিচার না হয় সেই ব্যবস্থাটি পাকাপোক্ত করেছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই খুনিকে আমরা দেখেছি সেই সরকারের আশীর্বাদে দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরিরত অবস্থায় ছিলেন। এরপর যখন ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে তখন তিনি আত্মগোপন করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা ছিল তাকে ধরার জন্য। আমাদের গোয়েন্দারা এবং পুলিশ বাহিনী যারা যারা কাজে ছিল তারা ভালো করেছে বলে আমি পূর্বেই বলেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কমিটমেন্ট যত খুনি যেখানেই আছে আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনব। যেখানেই থাকুক তাদের আনার জন্য সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। মাঝে মাঝে বিস্ময়ে হতবাক হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি দেশে না ফিরতেন তাহলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার কোন পর্যায়ে যেত।’
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র