রৌমারী উপজেলার চর নতুনবন্দর শুল্ক স্থলবন্দর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সরকারের একটি আয়কর সীমান্ত স্থান। দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস থেকে বন্দরে আমদানী বন্ধ থাকায় প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপর করছেন। এনিয়ে উভয় দেশের পাথর ব্যবসায়ীদের মাঝে দফায় দফায় বৈঠক হলেও কোন সমাধান করতে পারেনি ব্যবসায়ী মহল। ব্যবসায়ী ও শ্রমীকরা দ্রুত জোট ভেঙ্গে আমদানী চালু করার দাবী প্রশাসনের নিকট। চর নতুনবন্দর শুল্ক স্থলবন্দর সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গত ২৬ জুন ২০২৩ পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় শুল্ক স্থলবন্দরে আমদানী বন্ধ হয়ে যায়। স্থলবন্দরের একাধীক ব্যবসায়ীরা জানান, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে আমদানী বন্ধ হলেও পরবর্তীতে ডলার সংকট, ভারতে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার কারনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্তর্দন্দ, রাস্তায় চাঁদা আদায় ও পাথরের দাম বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যায় ভারতের পক্ষ থেকে পাথর দেওয়া বন্ধ রাখে। বাংলাদেশের পাথর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে পাথর আমদানী চালুর বিষয়ে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় যোগাযোগ করা হলেও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তারা। পরে গত ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ভারতের পাথর ব্যবসায়ীরা আমদানী-রপ্তানী চালুর বিষয়ে বাংলাদেশে আসেন এবং উভয় দেশের ব্যবসায়ীকে নিয়ে দুদিন ব্যাপি বৈঠক শেষে উভয় পক্ষে সমঝোতা হয়। কিন্তু বিধিবাম একমাস পেরিয়েও পাথর আমদানী করা সম্ভব হয়নি। এদিকে স্থলবন্দরে ৪ মাস আমদানী বন্ধ থাকায় বন্দরের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। স্বশানে পরিণত হয় স্থলবন্দর। বন্দরে পাথর ব্যবসায়ীসহ পাথর ভাঙ্গার কাজে নিয়োজিত প্রায় ৫ হাজার নারী ও পুরুষ শ্রমিক তাদের সন্তানাদি নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে না পেয়ে হতাশায় রয়েছেন অভিভাবকরা। কবে নাগাদ স্থলবন্দর চালু হবে তাও বলতে পারছেন না তারা। শ্রমিক নুরিমা খাতুন বলেন, সারাদিন কাজ করে সাড়ে ৩শ’ টাকা মুজুরী পাই। সেই টাকা দিয়ে চাল,ডাল,শাকসবজি ও বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচ করেছি। পাথর না আসায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা বর্তমানে খুব কষ্টে আছি। শ্রমিক ফারুক মিয়া কান্নাকন্ঠে বলেন, স্থলবন্দরে দিনমুজুর হিসেবে কাজ করে যে, মুজুরী পাই তাদিয়ে আমার পুরা সংসার চলছিল। পাথর আমাদনী বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছি। কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মামুন মিয়া বলেন, গত প্রায় ৫ মাস যাবত আমদানী বন্ধ রয়েছে। আমদানীর জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীর মধ্যে সমঝোতার বৈঠক হয়েছে। সমঝোতাও হয়েছে। কি কারনে আবার আমদানী হচ্ছে না, জানা যায়নি। লোড-আনলোড শ্রমিকলীগ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর সবুর ফক্কু জানান, পাথর আমদানী বন্ধ থাকায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক অসহায় হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। পাথর আমদানী চালু করতে উভয় দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে জোরদাবী করছি।