বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, চলমান গণআন্দোলন নিয়ে সরকারের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না বরং সকল জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলা করেই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিঝিল অঞ্চল আয়োজিত এক ভার্চুয়াল রোকন ও ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও অঞ্চল পরিচালক হেমায়েত হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মুহাম্মদ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসা এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাওলনা আমিনুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান প্রমূখ।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতকে নিবন্ধন না দেয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের শহীদ নেতাদের বিচক্ষণতা ও প্রবল জনমতের চাপে তদানীন্তর নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে নিবন্ধন দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ২০০৯ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট হয় এবং ২০১৩ সালে ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ে তা বাতিল হয়। সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর ২০২৩ আপীল বিভাগে মামলাটি উরংসরংংবফ ভড়ৎ ফবভধঁষঃ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এতেই জামায়াতে কর্মতৎরতা ও অগ্রযাত্রা থেমে যাবে না বরং সকল ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতা রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করা হবে-ইনশাআল্লাহ। তিনি সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা.শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ কারারুদ্ধ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথের আন্দোলন আরো বেগবান করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদে ১০টি আসন লাভ করেছিল। কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ১৯৮৮ সালে আমরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। ১৯৯১ সালে ১৮টি এবং ২০০১ সালে ১৭টি আসন লাভ করার পর জামায়াকে নিয়ে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একই সাথে শুরু হয় জুলুম-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ। কিন্তু জামায়াতের অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি বরং আমরা এখন রাজনৈতিক ময়দানে অপ্রতিরোধ্য শক্তি। তিনি দ্বীনের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে ময়দানে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আল্লাহ জান্নাতের বিনিময়ে আমাদের জানমাল ক্রয় করে নিয়েছেন। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সময়, আরাম-আয়েশ পরিত্যাগ করে আল্লাহর রাস্তায় জান-মালের কোরবানী করতে হবে। মূলত, মোমিন জীবনের চুড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ। আর কারা এই সৌভাগ্য অর্জন করবেন তা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই ভাল জানেন। তাই কোনো বাধা-প্রতিবন্ধকতায় হতোদ্দম না হয়ে দ্বীন ও জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি সরকারের পতন ও তত্ত্ববধায়ক সরকারের গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে হেমায়েত হোসাইন বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে। গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনতা রাজপথ ছাড়বে না। তিনি দাবি আদায়ে সকলকে রাজপথে সর্বশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি