বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গাজীপুর জেলার ধীরাশ্রম এলাকা থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে বলে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি: বিশিষ্ট চিকিৎসক ও পেশাজীবী নেতা ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা: এজেডেম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী আজ শুক্রবার এক যুক্তবিবৃতিতে অবিলম্বে ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। পেশাজীবী নেতৃদ্বয় বলেন, ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চু দেশের একজন গর্বিত সন্তান। তার মতো একজন পেশাদার চিকিৎসককে গ্রেফতার দেশের জন্য সুনাম ও কল্যাণ বয়ে আনবে না।
বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে পেশাজীবীদের এই দুই নেতা বলেন, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু একজন সম্মানিত মানুষ। তাকে আটকের পর র?্যাবকে কেন চোর ,ডাকাত, খুনী, সন্ত্রাসীদের মতো ফটোসেসন করে তা জনসম্মুখে প্রচার করতে হবে? আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি হ্টকারিতার পথ পরিহার করে সকল নাগরিকের জান, মাল ও ইজ্জতসহ সবধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। বর্তমান সরকারের আমলে পেশাজীবীরা ন্যূনতম সম্মান ও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুই নয়; ইতোমধ্যে অন্তত আরো ৩০ জন পেশাজীবীকে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের (জেইউজি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক শামসুল হুদা লিটন, বিশিষ্ট চিকিৎসক, খ্যাতিমান মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা: মইনুল হোসেন সাদিক ও প্রফেসর ডা: এম এ আজিজ, গাইনোকলজিস্ট ডা: ফাতেমা সিদ্দিকী, ডা: আতিকুল ইসলাম, দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: জাহিদুল কবির জাহিদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ হোসাইন, সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান মিলন, অ্যাডভোকেট জুয়েল মুন্সির সুমন, চাঁদপুর থেকে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন খান, রাজবাড়ী থেকে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বাবু, গোপালগঞ্জ থেকে তৌহিদুল ইসলাম, বরিশাল জেলা অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন, অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল ও অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রনি, ফরিদপুর থেকে অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান ও অ্যাডভোকেট খসরুল ইসলাম, বরগুনা থেকে অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসি মতিন, অ্যাডভোকেট মোঃ রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট মোঃ শহিদুল ইসলাম,
হবিগঞ্জ থেকে অ্যাডভোকেট ফাতিমা ইয়াসমিন, কৃষিবিদ সানোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকসহ অনেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এভাবে পেশাজীবীদের বিনা অভিযোগে এবং বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেয়ার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। পেশাজীবীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বিনাবিচারে মানুষ হত্যা, গুম, খুন, নির্যাতন ,নিপীড়ন ও দু:শানের কারণে দিন দিন এদেশ মনুষ্য বসবাসে অযোগ্য হয়ে পড়ছে। সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবে পেশাজীবীদের হেনস্থা করা অব্যাহত থাকলে দেশের কৃতি ও মেধাবী সন্তানরা দেশে থাকতে চাইবে না। তাই আমরা পেশাজীবীবীসহ ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ, দেশে গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, বিচারালয়ের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি- নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে। তাই আমরা একপক্ষীয় নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে নির্বাচবে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনের আহ্বান জানাচ্ছি।