গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গাছা থানা খাইলকুর এলাকায় ১৯৮৭ সালে আধুনিক মানসম্মত শিক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে খাইলকুর বাদশাহ্ মিয়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, প্রতিষ্ঠার শুরুতেই গুরুত্ব দেয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনার দিকে। আর এতে সাফল্যও এসেছে। প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি কখনও বিভাগীয়, কখনও জেলায় এবং কখনও উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে সেরা ফলাফল অর্জন করে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে। এ বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী বর্তমানে দেশে-বিদেশে যেমন সুনাম অর্জন করেছেন, তেমনি এলাকার মানুষের আস্থাও অর্জন করেছে দ্রুত। এলাকায় শিক্ষা বান্ধব ও সময়োপযোগী স্কুল হিসেবে মানুষের এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দৃষ্টি এ স্কুলের দিকে। এ স্কুল থেকে পড়াশোনা করে বহু ছাত্রছাত্রীরা ডাক্তার, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ারসহ সমাজের উঁচু স্থানে বিরাজ করছেন। জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পাস হওয়ার গৌরব রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চার কারণে জেলার অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় স্কুলটি ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা। নিয়মিত পড়াশোনা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতার কারণে প্রতিবছরই ভালো রেজাল্ট করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সঙ্গে ধারাবাহিক ফলাফলে তাদের অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল, ইতি, হাফছা, ওমারা, তারা জানান, স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম সময় উপযোগী। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকা-, বার্ষিক শিক্ষা সফর, উপজেলা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়ার মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষিকারা আন্তরিকভাবে পাঠদান করেন। অভিভাবক হিসেবে অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন মহি জানান, মেধা-ভিত্তিক ফাউন্ডেশন তৈরির মাধ্যমে স্কুলের ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য শিক্ষকম-লীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই স্কুল থেকে আমাদের ছেলে/মেয়েরা এসএসসি পাশ করার পর ঢাকার সুনামধন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন মেধা-নির্ভর শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। খাইলকুর বাদশাহ্ মিয়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ জানায়, প্রতিষ্ঠানটির পেছনের গল্প ১৯৮৭ সালে। মাত্র ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে স্কুলটির যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষার মান নিয়ে কখনো আপস করা হয়নি। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিগ্রিধারী মেধাবীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও লাইব্রেরি। আমরা সবসময় স্কুলে সেরা শিক্ষা দেয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে মানসম্মত করার পেছনে গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি-এর প্রচেষ্টা অন্যতম। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই স্কুলের প্রতি উনার সুদৃষ্টি রয়েছে। উনি সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন, বিদ্যালয় নতুন ভবন দিয়েছেন, আমাদের অনেক স্বপ্ন রয়েছে এ স্কুলকে ঘিরে। এলাকার মানুষদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের সেরা স্কুলে পরিণত করব। প্রধান শিক্ষক প্রদীপ দেবনাথ জানান, অভিজ্ঞ ও নিবেদিত শিক্ষক দ্বারা পাঠদান, পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা, ক্লাস মনিটরিং সেল গঠনের মাধ্যমে নিবিড় পরিচর্যা, বছরে ৩টি ক্লাস টেস্ট, ২টি মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বার্ষিক পরীক্ষার নম্বরের উপর চূড়ান্ত ফলাফল, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য পরিচালকম-লী, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, সুপরিসর বিজ্ঞানাগার, বিনোদনমূলক শিক্ষা কার্যক্রম, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, স্পোকেন ইংলিশ বিষয়ে পাঠদানের সুবিধা। প্রজেক্টরে স্লাইড-শো দিয়ে পাঠকে আনন্দদায়ক করার ব্যবস্থাসহ একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম এবং সমৃদ্ধ পাঠাগারসহ শিক্ষার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বিদ্যালয়টিতে বিদ্যমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখানে সাফল্যের অন্যতম কারণ কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলার সঙ্গে শতভাগ উপস্থিতি। নিয়মিত ক্লাস ও বছর শেষ হওয়ার আগেই সিলেবাস শেষ করানো। মেধা যাচাইয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করা।
অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করা। সম্প্রতি সময় একটি কুচক্রীমহল বিদ্যালয় সুনাম নষ্ট করার জন্য, অপপ্রচার চালাচ্ছে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানান,আমি ১৯৯০ইং সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকতা করে আসছি, ২০১৬ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে আছি। এই স্কুলটি ১৯৮৭ সালে দশটি গ্রামের মধ্যে উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ুক এই চিন্তা ভাবনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করেন। তখন থেকেই এই স্কুলের একটি সুনাম রয়েছে এবং সুনামের সাথে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে এই স্কুলে মাধ্যমিক শাখায় (১১২৮) কলেজ শাখায় (৯১) জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৩০ জন শিক্ষক ৬জন স্টাফ রয়েছে। এর মধ্যে এমপিও ভুক্ত শিক্ষক ৬জন। বর্তমানে স্কুলটির লেখা পড়ার মান অনেক ভাল। অপপ্রচারের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রদীপ দেবনাথ বলেন, বিশেষ কিছু লোক তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি হাসিল করার জন্য, বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ফেসবুক ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এবার এসএসসি পরীক্ষার ২০২৪ এর জন্য ২১৭ জন পরিক্ষার্থী টেস্ট পরিক্ষা দেয় এর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী ২১৩ জন এবং অনিয়মিত ৪ জন। টেস্ট পরিক্ষায় কৃতকার্য হয়ে এসএসসি পরিক্ষার জন্য ফরম পূরন করে নিয়মিত ১৯৫ জন শিক্ষার্থী এবং অনিয়মিত ১৬ জন শিক্ষার্থী। মোট ২১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার ২০২৪ এর জন্য ফরম পূরণ করে। শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত কোন ফি আদায় করা হয়নি। এছাড়াও কোচিং ফি বাবদ অর্থ আদায় করার বিষয়টি ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।