গাইবান্ধার জেলার ?বিভিন্ন লোকালয়ে শিয়ালের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা গেছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হলে এদের আক্রমণে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই সাথে গৃহপালিত ছাগল ও হাঁস-মুরগি ধরে খেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেকে। এরই মধ্যে মোটরসাইকেলর সঙ্গে শিয়ালের ধাক্কায় রাজু মিয়া(৪২) নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় শিয়ালটি কুপিয়ে মেরে ফেলছে স্থানীয়রা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাতের বেলায় গাইবান্ধার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের পথঘাট ও বাড়ির উঠানে অবাধে ঘোরাফেরা করছে বিশালাকৃতির শিয়ালের দল। এসময় মানুষ যাতায়াত করতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কুকুরের মতো দেখতে এ শিয়ালগুলো ইতোমধ্যে শতাধিক মানুষকে হামলা করেছে। শুধু মানুষকেই না। গ্রামীণ বধূদের পালিত ছাগলের বাচ্চা ও হাঁস-মুরগী ধরে খাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যার কারণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হলেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার পর রাস্তঘাট ও বাড়ির উঠানে শিয়ালের বিচরণ দেখা যায় বলে জানিয়েছেন হামিন্দপুর গ্রামের হাসান মিয়া। তিনি বলেন, এ প্রাণিগুলোর ভয়ে অনেকে সাবধানে চলাচল করছে। বুজরুক রসুলপুর গ্রামের জরিনা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে দেশি হাঁস-মুরগী পালন করছি। এ থেকে যেটুকু আয় হয়, তা দিয়ে সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করে থাকি। এরই মধ্যে রাতের আধারে শিয়াল আক্রমণ করে আমার খোয়ারের তিনটি মুরগী ধরে নিয়ে গেছে। এমন ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় আছি। সম্প্রতি রাতে বাহির থেকে বাড়ি ফিরছিলেন চকদাড়িয়া গ্রামের সবুজ মিয়া নামের এক যুবক। এসময় রাস্তার উপরে কয়েকটি শিয়াল তাকে আক্রমণ করেছে বলে জানান। কামারপাড়া ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসক (পশু) বুলু মিয়া বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর রোগি দেখার উদ্দেশ্যে বের হয়ে শালাইপুর নামকস্থানে পৌঁছিলে আমার মোটরসাইকেলের সামনে দুটি শিয়াল এসে হামলা করে। এসময় কৌশলে রক্ষা পেয়েছি। বেশ কয়েকদিন শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছেন জামালপুর ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী। তিনি সবাইকে সাবধানে চলাফেরা করতে সচেতন করছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুর ইসলাম বলেন, এমনিতে মানুষের ওপর শিয়াল আক্রমণ করে না। তবে জলাতঙ্ক রোগ হলে এদের চলাফেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এছাড়া উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে লোকালয়ে বিচরণ করে শিয়াল। সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহীনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, কাউকে যদি শিয়াল কামড় দেয়, তাহলে জরুরিভাবে জলাতঙ্ক রোগের টিকা নিতে হবে।