সব ঋতুই আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে জগতবাসীর কল্যাণের জন্য বিশেষ নিয়ামত হিসেবে দান করা হয়েছে। মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআন শরিফে দু’টি ঋতুর কথা উল্লেখ রয়েছে। একটি হলো শীত, অপরটি হলো গ্রীষ্ম। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তাদের (কুরাইশ গোত্রের লোকজনের) শীত ও গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের অভ্যস্ত ছিল।’ (সূরা কুরাইশ-২) বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা: বলেন, ‘শীতকাল হলো মুমিনদের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমদ) শীতকালে বিশেষ কিছু সুবিধা থাকে। যেমন- শীতকালের দিন ছোট থাকে, তাই শীতকালে দিনের বেলা রোজা রাখা সহজ হয়। আর শীতকালীন রাত হয় দীর্ঘ। তাই দীর্ঘ রাত হওয়ার দরুন প্রয়োজনীয় নিদ্রা সেরে তাহাজ্জুদের নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করাও সহজ হয়। হাদিস শরিফে শীতকালীন ইবাদত-বন্দেগির বিশেষ মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। এক হাদিসে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা: ইরশাদ করেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাতে নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (বায়হাকি)
হজরত উমর রা: বলেন, শীতকাল হলো মুমিনদের জন্য গনিমত। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলতেন, শীতকাল স্বাগতম, কেননা তা বরকত বয়ে আনে। সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষদের শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় থাকে না। শীত আসলে অসহায় মানুষগুলো শীতবস্ত্রের জন্য সমাজের বিত্তবানদের দিকে তাকিয়ে থাকে। দরিদ্র অসহায় মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নেক আমল।
বস্ত্র দানের গুরুত্ব বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ) অতএব শীতকাল ইবাদত-বন্দেগির বিশেষ সময়। তাই সব মুসলমানের উচিত শীতকালে ইবাদত-বন্দেগিতে জুড়ে থাকা। সমাজের বিত্তশালীদের দরিদ্র অসহায় মানুষদের শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র দিয়ে সাধ্যানুযায়ী তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার মাধ্যমে নেক আমলে মনোনিবেশ করা। শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে সমাজের বিত্তশালীদের জন্য ও শীতকাল নেক আমলের এক সূবর্ণ সুযোগ।
লেখক : পরিচালক, ফখরে বাঙ্গাল ইসলামিয়া মাদরাসা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া