চলছে পৌষ মাস, নরসিংদীতে জেঁকে বসেছে শীত। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও রাতের তীব্র শীতে জড়োসড়ো হয়ে কাটছে এ অঞ্চলের জনজীবন। রাতে শান্তির ঘুম পেতে কম্বল ও কম্ফোর্টারের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন শীতেকাবু মানুষ। কয়েক বছর আগেও শীতের একমাত্র সঙ্গী লেপ হলেও এখন অধিকাংশ মানুষ শীত নিবারণ করতে কম্বল ও কম্পোর্টারের দিকেই ঝুকছে বেশি। ফলে দিনে দিনে কদর বাড়ছে কম্বল ও কম্ফোর্টারের। কম্ফোর্টার দেখতে কম্বলের মতোই যা শীত নিবারণ করে উষ্ণতা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে কম্বলের চেয়ে এটি কয়েক গুণ হালকা এবং খুব দ্রুত উষ্ণতা দান করে। ফলে কম্বলের চেয়ে কম্ফোর্টারের চাহিদা বাড়ছে সমানে। বিক্রেতারা বলছে বিগত কয়েক বছর আগেও শীত নিবারণ করতে মানুষ লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় জমাত কিন্তু এখন শীত নিবারণের জন্য কম্বলকেই বেছে নিচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। সরেজমিন নরসিংদী বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, লেপ-তোষকের চেয়ে কম্বল ও কম্ফোর্টারের দোকানে ভিড় বেশি। কেউ কিনছেন কম্বল, কেউ কম্ফোর্টার। প্রতিটি কম্বল প্রকারভেদে ৪০০/৫০০ টাকা থেকে ৩৫০০/৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কম্ফোর্টার বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৮০০০ টাকা পর্যন্ত। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের কম্বল কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ। দাম নিয়ে যাদের কোনো ভাবনা নেই তারা কম্ফোর্টারের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি। এমনি কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, একটি লেপ কিনতে যে টাকা ব্যয় হয় সেই টাকা দিয়ে মাঝারি ধরনের দুটা কম্বল কেনা যায় এবং লেপের থেকে কম্বলের বিভিন্ন প্রকারের ডিজাইন থাকায় শীত থেকে পরিত্রাণ পেতে কম্বলকেই বেছে নিচ্ছেন তারা। সালমা ট্রেক্সটাইলের স্বত্তাধিকারী বাবুল মিয়া নামে একজন ক্রেতা বলেন, লেপ হচ্ছে এনালগ পিরিয়ডের একটা শীতবস্তু আর এখন ডিজিটাল সময়ে এনালগের জিনিস তো আর চালানো যায় না তাই কম্বল বা কম্ফোর্টার যেটা ভালো হবে সেইটা কিনব। মাধবদী বাজারের সোনার বাংলা মার্কেটে মহাসিন বেডিং স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মহাসিন মিয়া জানান, দেশি শিমুলতুলা কেজি প্রতি ১০০০ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার তুলা প্রতি কেজি ৮০০ টাকা নিচ্ছি। এতে লেপ বানাতে কাস্টমারের বেশি খরচ পড়ে যায়। বেশি খরচ পড়ায় মানুষ এখন দুই হাজার তিন হাজার টাকা দিয়ে কম্বল কিনে নিয়ে আসে। যে কারণে এখন আর লেপের তেমন চাহিদা নাই বললেই চলে। মাধবদীর রাইন ওকে মার্কেটে কম্বল বিক্রেতা আসাদ মিয়া জানান, আমাদের এখানে কম্বলের চাহিদাটা একটু বেশি। মাঝে মাঝে দুই একজন কম্ফোর্টারের ক্রেতা আসলেও আমাদের এখানে না থাকায় তারা কম্বল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, এ বছর শুরুতেই শীত পড়ায় কম্বল বেচাকেনা মোটামুটি ভালোই হচ্ছে, আশা করছি শীত পুরাদমে পড়া শুরু করলে আরো বেশি বিক্রি করতে পারবো। মাধবদী বাজারের রফিকুল ইসলাম নামের একজন লেপ তোষক ব্যবসায়ী বলেন, গতবছরও শীতের শুরুতে আমাদের লেপ-তোষকের দোকানে বেশ অর্ডার পড়তো কিন্তু এবছর লেপ-তোষকের অর্ডার একদম কম সারা দিনে দুইটা থেকে তিনটা লেপ বিক্রি করি আর তোষকের অর্ডার নেই বললে চলে।