সীতাকুন্ড শিম‘সহ শীতকালিন সবজি চাষে কৃষি পরিবারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আগ্রহ। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে কৃষি জমিতে দৃশ্যমান হচ্ছে শীতকালিন সবজির সবুজ বিপ্লব। আমিরাবাদ, মহাদেবপুর, ভাটেরখীল, মুরাদপুর, গুলিয়াখালী, অলিনগর, নড়ালিয়া ও আকিলপুরে শিম‘সহ শীতকালিন সবজির বাম্পার ফলনে কৃষি জমির বাজারমূল্য‘সহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ভৌগোলিক গুরুত্ব। উৎপাদিত সবজির মধ্যে শিম, টমেটো, লাউ, বরবটি, ফুলকপি, পাতাকপি, শসা, মূলা, ঢেঢ়স, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, মিষ্টি লাউ, জালিকুমড়া, চালকুমড়া, কইডা ও চিচিঙ্গা‘সহ বিভিন্ন হাইব্রীড জাতের শীতকালিন সবজি। উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি জমিগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও চাষীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলার হাসান গোমস্তা পাড়ার চাষী সফিউল আলম এর ২একর জমিতে শিম ও ৪৫ শতক জমিতে লাউ গাছের ফুল ও লতায় মাচা ভরে গেছে। মাচায় ফুল ও কচি‘র গন্ধে দারুণ খুশি কঠোর পরিশ্রমী এ চাষী। এবার ২ একর জমিতে শিম, ৪৫ শতক জমিতে লাউ ১৫ শতক জমিতে বেগুন ২২ শতক জমিতে টমেটো ও ১৮ শতক জমিতে অন্যান্য সবজি‘সহ প্রায় ৩ একর কৃষি জমিতে সবজির বাম্পার ফলনে সফিউল আলমের পরিবারে বিরাজ করছে স্বপ্নের আলো। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এবার উৎপাদিত সবজিতে ২ লক্ষ টাকার মতো আয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। উৎপাদন ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সবজি রপ্তানিতে সফল ভূমিকা পালন করে আসছেন হাসান গোমস্তা পাডার বাসিন্দা জামাল উল্লাহ‘র পুত্র এ সফিউল আলম। সীতাকু- মর্ডাণ হাসপাতাল সংলগ্ন আমিরাবাদে সবজি উৎপাদনে আরেক সফল চাষীর নাম মোঃ কেনু মিয়া। এবার বসতবাড়ী সংলগ্ন জমিতে শিম, টমেটো ও বেগুন‘সহ বিভিন্ন হাইব্রীড জাতের লাউ চাষ করেছেন তিনি। সচেতন এ চাষী জানান, বিভিন্ন পোকা-মাকড়, সাদা মাছি ও লাউ ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন থেকে ফসল রক্ষায় নিয়মিত স্প্রে কওে আসছি। তিনি শিম, লাউ ও টমেটো উৎপাদনে ভালো বাজার মূল্য পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান। হাসান গোমস্তা পাড়া এলাকায় সবজির বাম্পার ফলনের কথা আনন্দের সাথে জানান স্থানীয় বাসিন্দা কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মুজাহিদ প্রকাশ আনোয়ার হোসেন। সীতাকু- বাজারে আমিরাবাদ ও মহাদেবপুরের সবজির ব্যাপক চাহিদা থাকার কথা জানান পৌরসদরস্থ আলীয়া মাদ্রাসা গেট সংলগ্ন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নুরুল আমজাদ। আমিরাবাদের বাসিন্দা এ ব্যবসায়ী বলেন, এক সময় আমিরাবাদ‘সহ এ অঞ্চলের কৃষি জমিগুলোতে শুধু ধান চাষ হতো। তখন কৃষি জমির ক্রেতা খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ছিল। আর কৃষি জমি বিক্রি হতো নামমাত্র মূল্যে। উপজেলায় শিল্পোন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে সবজির বাম্পার ফলনে বর্তমানে সেই দিন আর নেই। এখন অবহেলার পরিবর্তে দেখা দিয়েছে সম্ভাবনা। তিনি আরো বলেন চাষীরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও কারিগরী সহায়তা পেলে ফসলের গুণগতমান ও উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, উপজেলায় শীতকালিন সবজি উৎপাদনে চাষীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফসলি জমিগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। উৎপাদন বৃদ্ধিতে চাষীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ‘সহ কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।