অদম্য ইচ্ছা শক্তি মানুষকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে নিয়ে যায় কথাটি যেমন সত্য তেমনি বাস্তব জীবনে আসে সফলতা। কাড়ি কাড়ি অলস টাকা থাকলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সফলতার ধারেও যাওয়া যায় না। তাই মেধা আর প্রবল ইচ্ছাই মানুষকে তার স্বপ্নের বাস্তব সিঁড়িতে নিয়ে যায়। বরিশালে তেমনি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন ফিরোজ হাওলাদার। উচ্চশিক্ষিত হয়েও চাকরি না করে সফল গরুর খামারি হয়েছে তিনি। ফিরোজ হাওলাদার বিএম কলেজ থেকে গনিত বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি আর্জনের পাশাপাশি ই.এম.বিএ সহ আইটি বিষয়ও রয়েছে তার অভিজ্ঞতা। লোভনীয় চাকরির অফার পেয়েও তা প্রত্যাখান করেছেন সে। ফিরোজ নিজ উদ্যোগে কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ২০১২ সালে একটি মাত্র গাভী গরু দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। বর্তমানে তার ফার্মে অস্ট্রেলিয়ান ৪৫টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি গাভী দৈনিক ১২০ লিটার দুধ দেয়। প্রতি লিটার দুধ ৯০ টাকা দর ধামে বিক্রি করেন। এছাড়া গাভীর গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করেন। যা ১০টি ফ্যামিলি ব্যবহার করে। গাভীর দুধ দিয়ে ঘি, টক দই, মিষ্টি দই, মাখম, পনির তৈরি করে তা বাজারজাত করেন ফিরোজ। দুধ বিক্রিতে রয়েছে চমক। আপনি চাইলে গাভী থেকে নিজে দুধ সংগ্রহ করতে পারবেন। অথবা ক্রেতার উপস্থিতিতে গাভী থেকে দুধ সংগ্রহ করে দেন তারা। ফার্ম থেকে বছরে ১২ লক্ষাধিক টাকা আয় করেন ফিরোজ। বর্তমানে তার খামারে ১০ জন কর্মচারি রয়েছে। গরুর জন্য চার একর জমিতে ঘাষ চাষ করেন ফিরোজ। ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় অনেক সময় দুধ দেওয়া সম্ভব হয় না। ফিরোজ হাওলাদার নগরীর রূপাতলী বসুন্ধরা হাউজিং’র মো. ফয়জুল হক হাওলাদারের ছেলে। র্ফামে দুধ নিতে আসা ক্রেতারা বলেন, ফিরোজ ভাইয়ের একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। খামারে এসে আমরা গাভী থেকে নিজে অথবা দাঁড়িয়ে থেকে দুধ সংগ্রহ করে নিতে পারে। যে দুধে কোন ভেজাল নেই। তাই আমরা অনেক খুশি। উদ্যোক্তা মো. ফিরোজ হাওলাদার আরও বলেন, আমার ছোট থেকেই চিন্তা ভাবনা ছিলো একজন উদ্যোক্তা হবো। তাই উচ্চতার ডিগ্রি অর্জনের পরেও কোন চাকরি না নিয়ে হয়ে গেলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। ভবিৎষতে আরও বড় কিছু করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। এবিষয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নূরুল আলম বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা ফিরোজকে একজন মডেল খামারি বললেই চলে। তার গাভীর খামারটি নিয়মিতভাবে আমরা পরিদর্শন করে তাকে সার্বিক পরামার্শ দেওয়া হচ্ছে। সে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। তাছাড়া ফার্মটি দেখে খুবই ভালো লেগেছে। ভবিৎষতে তাকে সরকারিভাবে আরো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। তবে ভবিৎষতে সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও বড় আকারে গরুর খামার করার চিন্তা রয়েছে তরুণ এ উদ্যোক্তার।