রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন

ভরতখালী-তিস্তামুখঘাটের রেলের কোটি টাকার অরক্ষিত সম্পদ হরিলুট

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

দুই যুগের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী-তিস্তামুখ ঘাটের রেল যোগাযোগ। রেল কতৃপক্ষের সঠিক তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় বন্ধ এ পথের কোটি কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এবং হরিলুট হচ্ছে। তিস্তামুখ ঘাট হতে ভরতখালীর শেষ সীমানা পর্যন্ত রেলের যায়গা, কলোনী কোয়াটার, কতিপয় ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল নিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে ভোগ করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বোনারপাড়া রেল স্টেশন থেকে তিস্তামুখ-ঘাট পর্যন্ত রুটে অবস্থিত ভরতখালী স্টেশন। বিগত ১৯৩৮ সালে বৃটিশ সরকার, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিহং, টাঙ্গাইল ও ঢাকার সাথে উত্তর রেলের রংপুর দিনাজপুর, লালমনিরহাট, লীলফামারী, কুড়িগ্রাম, পগড়, ঠাকুরগাঁ ও গাইবান্ধার রেল যোগাযোগ জন্য এ রেল পথ স্থাপন করা হয়। দু’পারের সাথে যোগাযোগের জন্য তিস্তামুখ-ঘাট বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত যমুনা নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু ছিলো। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ হলে ফেরি সার্ভিসসহ রেল পথটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে বোনারপাড়া, ভরতখালী ও তিস্তামুখ-ঘাট পর্যন্ত রেল যোগাযোগ। এদিকে, দুই যুগের অধিক সময় ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভরতখালী-তিস্তামুখ ঘাটের রেল পথসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ অরক্ষিত হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি কুচক্র রেলপথের সমস্ত কাঠের মূল্যবান স্লিপার গুলো অনেক আগেই চুরি করে নিয়ে গেছে। এখন তিস্তামুখ-ঘাট, ভরতখালী রেলস্টেশনের রেলপথে শুধু রেললাইন ছাড়া আর কিছুই নেই। নিচের মাটি ক্ষয় হয়ে সরে এলোমোলো হয়ে গেছে রেললাইন। অযতœ-অবহেলায় রেললাইন গুলো মরিচা পড়ে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কে বা কারা কেটে নিয়ে যাওয়া রেললাইলের অবশিষ্ট অংশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অপরদিকে, স্টেশনের পিছনের থাকা গুদাম ঘর ও কোয়াটারসহ স্থাপনা গুলোর ইট ও মালামাল সবই চুরি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া স্টেশনের অধিনে তিনটি কলোনীর কোয়াটার স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে নিজেদের মতো ব্যবহার করছেন। স্টেশনের এমন বেহাল অবস্থা চোখে পড়লেও এ সময় রেল কতৃপক্ষের কোনো লোকজনকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, চালু অবস্থায় এ স্টেশন এলাকা ছিলো জমজমাট ও আনন্দমুখর। রেলপথ বন্ধ হওয়ার পর থেকে এ স্টেশন এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি রেলের সাথে সংল্লিষ্ট এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। লিটন মন্ডল নামের স্থানীয় এক জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে এই স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রায় এক হাজার একর জমি, তিনটি স্টাফ কলোনী কোয়াটার, স্টেশন ঘর, গুদাম ঘর, ৯ টি রেল লাইন ছিলো এ স্টেশনের অধিনে। রেলের বিপুল অর্থের সম্পদ এখন সবই পরিত্যক্ত হলেও এসব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কতৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ নেই। সক্রিয় কোনো পদক্ষেপ না নিলে এ এলাকার বিপুল পরিমান সরকারী সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব নয়। লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বগুড়া-বাদিয়াখালী রেলপথের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বেেলন, বন্ধ ভরতখালী রেল স্টেশনের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন সরকারী পাহারাদার নিয়োগ করা আছে। প্রয়োজনে আরও একজন পাহারাদার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। অবৈধ দখলদারদের বিষয়ে বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের দায়িত্ব ভূ-সম্পদ বিভাগের কর্মকতার।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com