বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে, তার খেসারত অনেক দিন দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র যোজন যোজন দূরের ব্যবধান। দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই, কিন্তু পাকিস্তানের তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক ধরে রেখেছে। দুই দেশের মধ্যে পার্থক্যটা হলো আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশী শক্তি বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে। ভিসানীতি মিশে থাকার বিষয় আনে কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এ নিয়ে মাতামাতি নেই।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা, ভোট কারচুপি, জালিয়াতি, ৯ জনের প্রাণহানিও ঘটেছে। দেশটির বেলুচিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা গণতন্ত্রের ট্রু ফর্ম অনুসরণ করি। নির্বাচনে বিরোধীদল আসেনি, কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আমরা বলছি না আমাদের গণতন্ত্র শতভাগ পারফেক্ট। গণতন্ত্রের সবক দেয় যে পশ্চিমা বিশ্ব তারাও পারফেক্ট নয়।
আজ শনিবার আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দলের সুদৃঢ় ঐক্যের দরকার। গত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কৌশলগত কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করেছে। যে নির্বাচনে ৬২ জন নির্বাচিত হয়েছেন। তারাও কিন্তু আওয়ামী লীগের। অনেকে আওয়ামী লীগের পদধারীও আছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি, মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব, সংঘাতের মতো দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে। এসব হানাহানি দলের অভ্যন্তরে অন্তর কলহ এসব বিষয়ের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দলে সুদৃঢ় ঐক্য দরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সবকিছু ভুলে গিয়ে উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কি ঘিরে যেন মনোমালিন্য, কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরির জন্য এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন।
রাজনীতির মাঠে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যতটুকু জানি তার অনেকগুলো মামলায় জামিন হয়েছে। একটি মামলা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় তার ক্ষেত্রে একটু অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়তো একটা সময় জামিন হয়ে যাবে। একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবে এটা সরকারও চায় না। জামিন হয়নি, ভবিষ্যতে হবে না এটা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। একেক জন একেক কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি’র মুখপাত্র। তিনি বললে সেটা দলের বক্তব্য।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশের চিকিৎসা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পারিবারিকভাবে আবেদনটা করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কিভাবে সুপারিশ করে তারপর বলা যাবে। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।