এবারের ঈদ সাধারণ মানুষ কাছে দুঃখ-কষ্টের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘এবারের ঈদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা দুঃখ নিয়ে এসেছে, কষ্ট নিয়ে এসেছে। ঈদে কী করি আমরা? ঈদে সাধারণত ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী-বাচ্চাদেরকে কাপড় দেই। সেই কাপড় আমরা দিতে পারছি না। ভালো খাবার দেই? সেই খাবার আমরা দিতে পারছি না, সাধারণ মানুষরা তাদের ছেলে-মেয়েদের সেই খাবার দিতে পারছে না।’ বৃহস্পতিবার সকালে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সুপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একেবারে ধ্বংস করে দেশকে পরনির্ভরশীল করার জন্যই বর্তমান সরকার এসব করছে।’ এ সময় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ‘ঈদ মোবারক’ জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এক কঠিন দুঃসময় চলছে। আমাদের দল শুধু নয়, সারাদেশে বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী এখনো কারাগারে, আমাদের নেতারা এখনো কারাগারে। আপনারা জানেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, হত্যা করেছে, নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে, কারাগারে নিক্ষেপ করেছে। তারপরও এদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে, লড়াই করে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত যে নির্বাচন হলো যেটা কোনো নির্বাচনই ছিল না, আসলে এটা ছিল সম্পূর্ণ ডামি নির্বাচন। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। জনগণ অবশ্যই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ এই ফ্যাসিস্ট দখলদার সরকার যারা জোর করে বাংলাদেশের অর্থনীতি-রাজনীতি সব কিছুই ধ্বংস করে দিচ্ছে অবশ্যম্ভাবীভাবে তার পরিণতি নিয়ে আসবে। তাদেরকে জনগণের কাছে পরাজিত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বিশদ বলার কিছু নেই। শুধু এটুকু বলতে চাই, এভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বপনার কারণে সরকার আজ একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।’
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আশাবাদ ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই অবস্থার পরিবর্তন আসবে। আমরা আন্দোলন করছি, সংগ্রাম করছি। এদেশের জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।’ ১১ এপ্রিল সাড়ে ১১টায় দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদেরকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে সূরা ফাতেহা পাঠ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা মরহুম নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
এ সময়ে বিএনপি নেতা আহমেদ আজম খান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, রফিকুল ইসলাম জামাল, আবেদ রাজা, রফিক শিকদার, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, ইয়াসীন আলীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।
‘ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় মহাসচিব’
শহীদ জিয়ার কবর জিয়ারতের পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম রাজধানীর আসাদ গেটে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদসহ পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন, তাদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এক মামলায় দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।