জেলে বন্দি অবস্থাতেই ভারতের পার্লামেন্ট তথা লোকসভা নির্বাচনে জিতেছেন দুই প্রার্থী। পাঞ্জাবের অমৃতপাল সিংহ এবং কাশ্মিরের শেখ আব্দুল রশিদ নিজেদের কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। আর তাতেই তৈরি হয়েছে জটিলতা। বন্দি অবস্থায় থাকাকালীন এই দু’জন আদৌ এমপি হিসাবে শপথ নিতে যেতে পারবেন কি না, পারলেও তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং লকআপে হামলা চালানোর অভিযোগে ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের মোগা থেকে গ্রেফতার করা হয় অমৃতপালকে। ‘ওয়ারিশ পঞ্জাব দে’ সংগঠনের নেতা ছিলেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, ১৮ মার্চ সঙ্গীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন অমৃতসরের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে। তার পর থেকে বেশ কিছু দিন ফেরার ছিলেন। জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) গ্রেফতার করা হয় তাকে। গ্রেফতারির পর নিয়ে যাওয়া হয় আসামে। বর্তমানে সেখানেই ডিব্রুগড়ের একটি জেলে রয়েছেন অমৃতপাল। জেলে থাকাকালীনই লোকসভা ভোটে লড়ার আবেদন জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের এই খালিস্তানি নেতা। আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। খাদুর সাহিব আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়তে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন কমিশনের কাছে। ৩৮.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন তিনি। কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়েছেন প্রায় ২ লাখ ভোটে। আর এক জেলবন্দি জয়ী প্রার্থী হলেন জম্মু ও কাশ্মিরের আব্দুল রশিদ। তাকে অনেকে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ বলেও চেনেন। জম্মু ও কাশ্মিরের বারামুলা আসন থেকে জিতেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে উগ্রবাদীদের অর্থসাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট থেকে তিহাড় জেলে বন্দি রশিদ।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বা জিতলে লোকসভায় গিয়ে এমপি হিসাবে শপথ গ্রহণ এই দু’জনেরই সাংবিধানিক অধিকার। তবে বন্দি হিসাবে আইনগত বাধা রয়েছে। শপথ গ্রহণের জন্য তাদের আগে জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিতে হবে। কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে সংসদে গিয়ে শপথ নিতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে তার পর আবার জেলে ফিরতে হবে দু’জনকেই। শপথগ্রহণের পর লোকসভার স্পিকারকে এই প্রার্থীদের লিখিতভাবে জানাতে হবে, তারা সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। অনুপস্থিত হিসেবে তারা সংসদের সদস্য থাকতে পারেন কি না, ভোটাভুটির মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে কোনো অপরাধে জয়ী প্রার্থীরা দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তাদের দু’বছর বা তার বেশি দিনের জেল হলে সঙ্গে সঙ্গে এমপি পদ খোয়াতে হবে তাদের। অমৃতপাল এবং রশিদের ক্ষেত্রে কী হয়, সেটাই এখন দেখার। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা