নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত ও ঢালাও গণগ্রেফতার করে জনরোষ বিভ্রান্ত করা যাবে না
বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, সাধারণ ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে সরকার নানা উস্কানিমূলক বক্তব্য ও দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা করে দমনে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে দমনের পথ বেছে নেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারের ইন্ধনে ছাত্র, অভিভাবক, জনতার স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণের উপর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ-র্যাব নির্বিচারে হামলা ও গুলি চালায়ে দুই শতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়। হাজারো ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে ও নির্মম হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, এই গণহত্যার দায়ে সরকারের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। সরকারের ভূমিকার কারণেই উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্ম হয়েছে এবং দেশে জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকারকে হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছে। এখন সরকার নিজেদের দায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর উপর চাপিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাই, এই মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ ছাড়া সমস্যার কোন ন্যায়সঙ্গত সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, স্মরণকালের ইতিহাসে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় দুই শতাধিক ছাত্রজনতাকে হত্যার বিরল ঘটনা ও হত্যাকারীদের বিচারের প্রশ্ন আড়াল করার জন্য সরকার নানা কল্পকাহিনী সামনে এনে আন্দোলনকে দিকভ্রান্ত করার অশুভ তৎপরতা লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, কোন নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত এবং গ্রেফতার করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি অবিলম্বে গণগ্রেফতার বন্ধ এবং গ্রেফতারকৃত ছাত্র, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ সকলকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহবান জানান।
কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে ব্যারাকে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান। তিনি দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে এবং বাজার সিন্ডিকেট ও লুটেরা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ জনজীবনের স্বস্তি ফিরিয়ে আনারও আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, অতীতে কোন সরকারই ফ্যাসিবাদী পথে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রুখে দিতে পারেনি, এই সরকারও দমন-পীড়ন চালিয়ে ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমাতে পারবে না। জনগণের প্রতিরোধের মুখে দুঃশাসনের অবসান হবেই। আন্দোলনের গতিপথে জনগণ প্রতিদিন সেই রাজনৈতিক সংগ্রামের পথেই অগ্রসর হচ্ছে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি