বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। পদত্যাগ করে গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে। তাঁর সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। হেলিকপ্টারটি ভারতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এ বছরের ১১ জানুয়ারি। এর আগে ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচন হয় একতরফা, যেখানে বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এই নির্বাচন আগের রাতেই ব্যালটে সিল মারার ব্যাপক অভিযোগ ছিল। এ নির্বাচন ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হন। তবে এ নির্বাচনও বিতর্কিত। এতেও প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি। নিজদলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করে ‘ডামি’ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আয়োজন করা হয়। এ নির্বাচনটিকে বিরোধীরা ‘ডামি নির্বাচন’ বলে আখ্যা দেন। ছয় মাসের মাথায় ব্যাপক ছাত্র ও গণবিক্ষোভের মুখে তিনি আজ পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারযোগে দেশ ছেড়েছেন।
পতনের আগে প্রকাশিত ইন্ডিয়া টুডের নিবন্ধ : বাংলাদেশে একপ্রকার নৈরাজ্য চলছে। নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সহিংসতায় রবিবার কমপক্ষে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কার্যালয় জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী সহিংস আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শেখ হাসিনার গদি টলমল। রবিবার অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৮৮তে পৌঁছে গেছে। প্রতি মিনিটে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবি মেনে নেন, তাহলে আগামী দিনে একটি সামরিক সরকার প্রত্যক্ষ করতে চলেছে বাংলাদেশের মানুষ। কারণ জনগণের রায় তার আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। স্পষ্টভাবে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনের কথা না বললেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা জনগণের পাশে আছে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান অফিসারদের বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক’ এবং ‘তারা সর্বদা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে’। একই সময়ে কয়েকজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া সমর্থন প্রদর্শনে তার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি লাল করে দিয়েছেন।
গত ১৯ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দেয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর নেতারা সহিংস বিক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে স্লোগান তোলা হচ্ছে – ‘হাসিনা সরকারকে যেতে হবে’। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেট আংশিক বন্ধ আছে। বাংলাদেশি মোবাইল ফোন অপারেটরদের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তারা দেশে ফোর জি পরিষেবা বন্ধ করার নির্দেশনা পেয়েছেন। ঢাকা-ভিত্তিক একটি সূত্র ইন্ডিয়াটুডে-কে জানিয়েছে- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল কিন্তু পুলিশ বা অন্য কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন , ‘বেশিরভাগ জেলায় আওয়ামী লীগের অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। একজন এমপির বাসভবনে হাজার হাজার জনতা হামলা করেছে এবং তাকে পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।’
একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা ডালাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য শাফকাত রাব্বি বলছেন – ‘শেখ হাসিনা সম্ভবত একই ভুল করেছিলেন যেটা ইয়াহিয়া খান ২৬শে মার্চ, ১৯৭১ সালে নির্বিচারে ঢাকার মানুষকে গুলি করে করেছিলেন। হাসিনা জুলাইয়ের মাঝামাঝি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং ফলাফলটি একই দিকে যাচ্ছে
বলে মনে হচ্ছে’। বাংলাদেশের একাধিক সূত্রের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি যোগ করেছেন – ‘৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রায় এক মাস তরুণ শিক্ষার্থীদের পেছনে তাড়া করার পর সারাদেশে পুলিশ ক্লান্ত এবং শ্রান্ত । এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ করছে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কিছু সদস্য (আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন) যারা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল তারা নিজেরাই হাতে আইন তুলে নিয়েছে এবং প্রায় ৪০ জন ছাত্রকে হত্যা করেছে’। শাফকাত রাব্বি বলছেন, বাংলাদেশের রাস্তায় প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিবাদে নেমেছে।
ঢাকা-ভিত্তিক সূত্রগুলি বলছে যে, এবার হয়তো হাসিনার যাবার সময় উপস্থিত এবং একটি সামরিক সরকার তার জায়গা নেবে। তবে হাসিনা বাংলাদেশে থাকবেন কিনা তা নির্ভর করবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর। তিনি সবাইকে অনুরোধ করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন বটে তবে জনগণের ক্ষোভ তার এবং তার দলের প্রতি বেড়েই চলেছে । শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। প্রধান বিরোধী দল – বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সাম্প্রতিক নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বয়কট করে । শাফকাত রাব্বি মনে করেন ‘এই অবস্থা থেকে হাসিনার বাঁচার একমাত্র উপায় হবে ব্যাপক হারে দমনপীড়ন। সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই তাদের মেশিনগান নিয়ে সারা বাংলাদেশে প্রায় ১০ মিলিয়ন বিক্ষোভকারীর মুখোমুখি হয়ে রাস্তায় নেমেছে। ছাত্র বিক্ষোভ দমন করার জন্য আগামী দিনে যে ভয়ঙ্কর মাত্রার দমনপীড়ন শুরু হবে তা সহজেই অনুমেয়। তিনি আবার একটি আক্রমণাত্মক জয় ছিনিয়ে নিতে পারেন, তবে এই মুহুর্তে সেটির সম্ভাবনা কম’।
ঢাকাভিত্তিক সূত্র মোতাবেক, হাসিনা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় বাংলাদেশিদের মনে ভারতের বিরুদ্ধে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ১৯ জুলাই থেকে একটি নজিরবিহীন বিক্ষোভ প্রত্যক্ষ করছেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে, হাসিনা সরকার এই মুহূর্তে পতনের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ তীব্র হওয়ার সাথে সাথে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ২১শে জুলাই কোটা কমিয়ে ৫ শতাংশ করে। এরপরেও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। বিক্ষোভকারীরা অশান্তি দমন করতে সরকার কর্তৃক ব্যবহৃত অত্যধিক বল প্রয়োগের জন্য জবাবদিহিতার দাবি জানায়। আন্দোলন (যার কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা), যা একাধিকবার সহিংস রূপ নিয়েছে, তাতে এখনো পর্যন্ত সারা দেশে কমপক্ষে ২৫০ জন (সরকারি হিসেব ) নিহত হয়েছে। সংখ্যাটা ক্রমবর্ধমান।
আওয়ামী দুশাসনের খ-চিত্র : বর্তমান বাংলাদেশে পুলিশি শাসন চলছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই বাংলাদেশকে পুলিশি স্টেটে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আইন সংশোধন করে পুলিশকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুলিশকে প্রমোশন দিয়ে তাদের গ্রেড বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেতন ভাতা বাড়িয়ে দিয়ে পুলিশকে চতুমূর্খী সুযোগ সুবিধা তৈরী করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের এই কাজের ফলে পুলিশ নিজ দায়িত্বে সরকারের খাস গোলামে পরিণত হয়েছে। গত পাঁচ বছর বিরোধীদলের আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামী লীগ দলীয় বা সাংগঠনিকভাবে মাঠে সক্রিয় থেকে বিরোধীদলের আন্দোলন ঠেকাতে না পারলেও পুলিশকে দিয়ে আন্দোলন দমাতে পেরেছে। আর পুলিশও দলীয় ভূমিকা পালন করতে গিয়ে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের নানা ঘোষণা এবং পদক্ষেপ গ্রহণের পরও আমাদের দেশের পুলিশ যে ‘জনগণের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি তা সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশি নির্যাতনের চিত্র থেকেই প্রতিফলিত। বিভিন্ন সময় ঘুষ-দুর্নীতি-ধর্ষণের মতো নানা ন্যক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ বাহিনীর নেতিবাচক এই প্রবণতা বর্তমানে এতটাই বেড়েছে যে, তা এই বাহিনীর অতীতে সব ধরনের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বললেও অত্যুক্তি হয় না। ইয়াসমিন ধর্ষণ-হত্যা থেকে শুরু করে ছোট-খাটো অনেক অপরাধের সঙ্গেই পুলিশের সম্পৃক্ততার প্রমাণও মিলেছে, জড়িতদের সাজাও হয়েছে। কিন্তু এরপরও বন্ধ হয়নি পুলিশি নির্যাতন। সম্প্রতি রাজধানীতে রাব্বী নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা পুলিশের হাতে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হলে পুলিশের বর্তমান কর্মকা- আলোচনায় আসে। এ ঘটনার রেশ কাটতে-না কাটতে এবার পুলিশের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিদর্শক বিকাশচন্দ্র রায়। পুলিশি নির্যাতনের এই ঘটনার নিঃসন্দেহে ভীতিপ্রদ এবং একই সঙ্গে উদ্বেগজনক।
২০০১ সালে ‘দুর্নীতির শীর্ষে পুলিশ’ শীর্ষক একটি জরিপ প্রতিবেদন দৈনিকের সংবাদ শিরোনাম হয়ে আসে। এরপর থেকে পুলিশের নির্যাতনে সাধারণ মানুষ যে কতটা অসহায় সেই চিত্র গণমাধ্যমে আসতে শুরু করে। আবার সব ঘটনা যে গণমাধ্যমে আসে তেমনটিও নয়। সারাদেশে সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশি নির্যাতনের কথা ছেড়ে দিলেও ঢাকার আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে হত্যা, ঢাবি শিক্ষার্থী কাদেরকে নির্যাতনসহ অনেক ঘটনাই সামনে আসে। গুটিকতক পুলিশের কর্মকা-ে গোটা পুলিশ বিভাগের ওপরই সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হওয়াও অমূলক নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুলিশকে গণ্য করা হয় জনগণের সেবক তথা বন্ধু হিসেবে। আর আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর অবস্থান ঠিক এর বিপরীতে। সম্প্রতি ডিএসসিসি কর্মকর্তা নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশকর্তার ‘দেশের রাজা পুলিশ’ জাতীয় দম্ভোক্তির মধ্যদিয়েও পুলিশের অবস্থান অনুমেয়। জনগণের টাকায় প্রতিপালিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনীর পরিস্থিতি ও অবস্থান এমনই হলে, তা ভবিষ্যতের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া সমীচীন।
খোদ পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রমতে, ২০১৫ সালে রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ২২ হাজার অভিযোগ এসেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তদন্ত শেষে শাস্তিও হয়েছে ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের। চাকরিচ্যুত হয়েছেন ৭৬ জন। যে কেউ অপরাধ করলে তার আইনানুগ বিচার হবে। পুলিশ সদস্যরাও এর বাইরে নয়। সাধারণ মানুষের অপরাধের সঙ্গে পুলিশের অপরাধকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। যাদের দায়িত্ব অপরাধ দমন করা, তারা যখন নিজেরাই অপরাধ করে, তখন সেটি হয় বড়ই দুঃখজনক।
সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এটাকে মারাত্মক অপরাধ হিসেবে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে আমাদের দেশে এধরনের ঘটনা কদাচিত ঘটলেও গত ১০ থেকে ১৫ বছর থেকে এ ধরনের রিমান্ড ও হেফাজতে নির্যাতনের প্রবণতা বেড়েছে। আমরা লক্ষ্য করছি- কেউ রিমান্ডের জন্য আবেদন জানালেই ম্যাজিষ্ট্রেটগণ প্রায়ই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ফলে রিমান্ডের যথেচ্ছ অপব্যবহার হচ্ছে, এবিউজ হচ্ছে।ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৩ ধারায় রয়েছে, কোনো পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য আইনে বর্ণিত ২৪ ধারা অনুযায়ী কোনো প্রকার প্রলোভন, হুমকি বা প্রতিশ্রুতি দেবেন না বা দেওয়াবেন না।
‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের দায় এড়াতে পারে না আ.লীগ’: আওয়ামী শাসন আমলের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের দায় এড়াতে পারে না আ.লীগ’। জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে মূলত আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের মধ্যে। এরপরও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এবার নির্বাচনকেন্দ্রিক সংখ্যালঘু নির্যাতনের যেসব ঘটনা, তার দায় আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না বলে মনে করেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। তাঁরা বলছেন, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে মূলত আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের মধ্যে। এরপরও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াত দায়ী বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর এক জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা, সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজনদের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। বৈঠকে মানবাধিকারকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, গবেষক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা অংশ নেন। এই বৈঠকের আয়োজন করেছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, দেশের সংখ্যালঘুরা ত্রিশঙ্কু অবস্থায় আছে। ভোট দিতে গেলেও বিপদ, ভোট না দিলেও বিপদে পড়তে হয়। নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘুদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করে, তাদের ভয়ার্ত অবস্থায় থাকতে হয়। এটি প্রকৃতপক্ষে নির্যাতনের চেয়েও ভয়াবহ। বৈঠকে জানানো হয় গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে মোট ১০ দিনে (৪-১৩ জানুয়ারি) সংখ্যালঘু নির্যাতন ও হামলার অন্তত ১৩টি ঘটনা ঘটেছে। এর সবই নির্বাচনকেন্দ্রিক। এসব ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে বেসরকারি সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলেছে, দেশের ১২ জেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বাচনকেন্দ্রিক হামলা–নির্যাতন, ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর এবং হুমকির ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা–নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এইচআরএসএস। সরকার বলতে পারে এগুলো ঘটেনি, বানোয়াট, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সরকারের লোকজন নিজেদের দায়বদ্ধতা স্বীকারই করেন না।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর নির্বাচনকেন্দ্রিক নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে গতকালের গোলটেবিল বৈঠকে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘সরকার বলতে পারে, এগুলো ঘটেনি, বানোয়াট, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সরকারের লোকজন নিজেদের দায়বদ্ধতা স্বীকারই করেন না। তাঁরা যেভাবে কথা বলেন, তাতে গা শিউরে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে তাঁরা দায়বদ্ধতার প্রমাণ দিক।’ বৈঠকের শুরুতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। ধারণাপত্রে বলা হয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ভেবেছিল, এবার নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক শক্তির আক্রমণ তেমন প্রকট হবে না। কিন্তু নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছে, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দাবিদার দল আওয়ামী লীগের একাংশের হাতে অথবা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর নামে এসব হামলা হয়েছে। যার শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও ঘটে, বিএনপি ক্ষমতায় এলেও তা চলবে বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তাঁর মতে, লুটেরাদের সপক্ষে সুশাসন চলছে। সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে হলে তরুণদের বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যেসব বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তা মোটেও সঠিক নয় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল রাতে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সংখ্যালঘু হিসেবে দেশের কোথাও কারও প্রতি কোনো হামলা বা আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করার বিষয়টি উঠে আসে গতকালের গোলটেবিল আলোচনায়। ঝিনাইদহ শহরের ঘোষপাড়া এলাকায় ৯ জানুয়ারি এ ঘটনা ঘটে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর (ঝিনাইদহ-২ আসন) অনুসারী ও স্থানীয় বাসিন্দা বরুণ কুমার ঘোষ হত্যাকা-ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর (আওয়ামী লীগের নেতা) লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টি তুলে ধরে গোলটেবিল বৈঠকে অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগের সমর্থককে হত্যা করা হয়েছে। দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় মারা গেছেন—এর কি বিচার হবে? আমরা দেখতে চাই আওয়ামী লীগ কী করে।’ নির্বাচন মানেই এখন ধর্মীয় সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন বলে মনে করেন বাংলাদেশ পূজা উদ্?যাপন পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ। তিনি বলেন, এই জায়গা থেকে নির্বাচনকে ফেরাতে না পারলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেও বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। এবার নৌকা, ট্রাক ও ঈগল—তিনটি প্রতীকের প্রার্থী একই দলের ছিলেন। নৌকা জিতলে ট্রাক ও ঈগল, ট্রাক জিতলে নৌকা ও ঈগল মারামারি করেছে।
ভিন্নমত, ভিন্ন চিন্তা ও ভিন্ন ধর্মকে কোণঠাসা করা হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, সমাজের মধ্যে ধর্মান্ধতা প্রবলভাবে ছড়িয়ে গেছে। সহিষ্ণুতা বিষয়টি কমে গেছে। বাংলাদেশজুড়েই দুর্বলের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চলছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বলেন, অত্যাচারের লক্ষ্য শুধু ধর্মীয় নয়, স্বার্থের, সম্পদের এবং জমি দখলের লক্ষ্যেও নির্যাতন হয়।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের পেছনে সরকারের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, সরকার ন্যায়সংগত কাজ করছে না। এত ঘটনা ঘটার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সরকার ব্যবস্থা নিলে এসব ঘটত না। আলোচনায় অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে কেন উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে? এবারের নির্বাচন আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর যারা হামলা করেছে, তারা কারা? নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের লোক যারা অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে, তারা হামলা করেছে। এবারের হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াত দায়ী, এটা বলে পার পাওয়া যাবে না। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় এবার আওয়ামী লীগ তাদের দায় এড়াতে পারে না।
সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আওয়ামী লীগের অপঃরাজনীতি: বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল ধরে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ এখানে সহাবস্থান করে আসছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ শতকরা নব্বই ভাগের বেশি মুসলিম হলেও হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের অনুসারীরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন যুগ যুগ ধরে। ৩য় বিশ্বের সমস্যাগ্রস্থ দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। শিষ্টাচার বহির্ভূত রাজনীতি, দোষারোপের অপরাজনীতির চারণভূমি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উপর বার বার আঘাত দেখে এদেশের মানুষ অভ্যস্থ। এসব কিছুতে ঘি ঢালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অযাচিত হামলার ঘটনা। মিডিয়া, আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সকলেই সোচ্চার সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কিন্তু কি এক অজানা কারণে সকলের আংগুল জামায়াত ইসলামীর দিকে । বর্তমানে তো তা আর ও বড় আকার নিয়েছে। দেশের ভিতরে বা বাইরে সংখ্যালঘু নিয়ে কোন ঘটনা ঘটেলেই তার দোষ চাপানো হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর। খুন-খরাবি থেকে শূরু করে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব ধরণের চক্রান্তে জামায়াতের ঘাড়েই চাপানো হয় বোঝা। আইন শৃংখলা বাহিনী যখন কোন কুল কিনারা পাননা তখন জামায়াতকে দায়ি করে দ্বায়সারা বক্তব্য প্রদান করেন। এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ও সেই তালে তাল দেয়। জামায়াতের ওপর দোষা চাপানো সরকারের নেশায় পরিণত হয়েছ। দেশের পুলিশ সবগুলো কেসের জট খুলতে না পারলেও জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা নেই সেটা বের হয়ে আসে। কিন্তু কেন প্রথমে জামায়াতের ঘাড়ে দোষারোপ চাপানো হয়, তার কোন স্বদুত্তর প্রশাসনের কাছে নেই। এরকম নানান অপরাধে জামায়াত কে জড়ানোর পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলায় ও অযথাই এবং অনুমানে নির্ভর করে দায়ী করে পরে নিজেদের নেতা কর্মীদেরই জড়িত থাকার নির্লজ্জ প্রমাণ ও রয়েছে আওমীলিগের ইতিহাসে। আওয়ামী লীগ সরকারই কম বা বেশি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিয়েছে ও দিচ্ছে। তা তারা দিয়েছে ও দিচ্ছে ‘ভোটের জন্য’, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য’ বা ‘ক্ষমতা পাওয়ার জন্য’। আমরা মনে করি শাসকশ্রেণী ও গোষ্ঠী না চাইলে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হবে না বরং তার বিলোপ ঘটবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই বাঙালি-অবাঙালির বিভেদ তৈরি করে জাতিকে বিভক্ত ও বিভ্রান্ত করে চলছে। তাদের উদ্দেশ্য লুটপাট, হিন্দুদের জমি দখল। হিন্দুদের তাড়াতে পারলে অর্থসম্পদ সম্পত্তির দখল আর দেশে থাকলে জোর জবরবস্তি করে ভোট নেয়াই তাদের মুদ্রা দোষে পরিণত হয়েছে। এদেশে সাম্প্রদায়িক বিভেদের পেছনে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস কাজ করেনি। সবই মূলত ঘটেছে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পারস্পরিক হিংসাবিদ্বেষ থেকে।
প্রাণের নিরাপত্তা : অমুসলিম নাগরিকের রক্তের মূল্য মুসলমানদের রক্তের মূল্যের সমান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলে জনৈক মুসলমান অমুসলিমকে হত্যা করলে তিনি খুনিকে মৃত্যুদ- দেন। তিনি বলেন, “যে নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়া হয়েছে, তার রক্তের বদলা নেয়ার দায়িত্ব আমারই।”
“যে অমুসলিম নাগরিককে কষ্ট দিল আমি তার বিরুদ্ধে বাদি হবো। আর আমি যার বিরুদ্ধে বাদি হবো আমি কিয়ামতের দিন জয়ী হবো।” (তারিখে বাগদাদ)
‘যে সংখ্যালঘুকে কষ্ট দিল সে আমাকে কষ্ট দিল আর যে আমাকে কষ্ট দিল সে স্বয়ং আল্লাহকে কষ্ট দিল।’ (তাবরানি আওসাত) হযরত আলী (রা)-এর আদালতে সংখ্যালঘু নাগরিক হত্যাকারী এক মুসলিমকে উপস্থিত করা হলো এবং সাক্ষী-প্রমাণের মাধ্যমে তার অপরাধ প্রমাণিত হলো।
ইসলাম সকল প্রকার সম্প্রদায়িক শ্রেণীভেদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে। লঘিষ্ঠ আর গরিষ্ঠকে মুক্ত করতেই এই জীবনব্যবস্থার আগমন। শাশ্বত বিধান আল ইসলামের লক্ষ্যই হচ্ছে সকল প্রকার ভেদাভেদ উঁচু-নিচু, হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা। লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে অন্য সকল মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের পতাকাতলে সমবেত করা। সুতরাং যারা এতুটু চেতনা বিশ্বাস ও আল্লাহর কাছের জবাবদিহির মানসিকতাকে লালন করে তারা কখনোই অন্যের অধিকার হরণ সামাজিক অনাচার সৃষ্টি ও সম্পদ লুণ্ঠনের মতো গর্হিত কাজ করতে পারে?